কিছু কিছু নাস্তিক আছে যারা আপত্তি করে বলে- যার অস্তিত্ব দেখা যায় না তাকে কীভাবে মেনে নেই?
উত্তর: কোনকিছুর অস্তিত্ব প্রমান করতে গিয়ে যদি আমরা শুধুমাত্র দেখার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকি, তাহলে সেটা হবে আমাদের নিছক দাবি।
কেননা পৃথিবীতে এমন অনেক কিছু আছে যা আমাদের না দেখেই মেনে নিতে হয়, কোনরুপ প্রশ্ন উত্থাপন ছাড়াই।
যেমনঃ বাতাসের অস্তিত্বের সন্ধান পেতে আমাদের তকের সাহায্য নিতে হয়, চোখের নয়।
অনুরূপ শব্দ, ধ্বনির অস্তিত্বের সন্ধান পেতে আমাদের কানের সাহায্য নিতে হয়, চোখ ও তক উভয়ই এখানে অপারগ।
আবার দেখুন ঘ্রাণের বেলায় উপরের সবগুলোই নিষ্ক্রিয়, একমাত্র নাক ব্যতীত তার অস্তিত্বের টের পাওয়া অসম্ভব।
মোটকথা কোনকিছুর অস্তিত্ব স্রেফ দেখা, শোনা, বা স্পর্শের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়,
বরং বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জিনিসের মাধ্যমে অস্তিত্ব প্রমান হতে পারে। যার ভুরি ভুরি দৃষ্টান্ত আমরা বিনা বাক্যে মেনে নিতে বাধ্য।
আবার কিছু নাস্তিকদের সাদাকালো প্রশ্নটি আরেকটু আপডেট হয়ে, “যা পঞ্চ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয় তার অস্তিত্ব প্রমাণিত নয়” এই রঙিন রূপ ধারণ করে। যাক একটু হলেও আগের ব্যক্তিদের তুলনায় এরা উন্নত।
জানার সীমাবদ্ধতার কারণে জ্ঞানের দরজায় তালা মেরে দেওয়াটা কীরূপ বুদ্ধিমানের কাজ আমি জানি না! তবে এতটুকু নিশ্চয়ই জানি বিজ্ঞানীদের মনোমানসিকতা যদি এমন হতো! তাহলে আবিষ্কারের দ্বারটাও বন্ধ হয়ে যেত।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো! আজকাল নাস্তিকরা বিজ্ঞানকেও উপেক্ষা করতে শুরু করেছে হাতে নাতে প্রমাণ পেয়েও পিঠ বাচাতে তা এড়িয়ে যাবার দশা।
এই যে জ্ঞানার্জনে তাদের এই সূত্র “যা পঞ্চ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয় তার অস্তিত্ব প্রমাণিত নয় ” এর ভিত্তি কী? কিছুই না। এর কোন ভিত্তি নেই। জাস্ট পৃথিবীতে পঞ্চ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়াদির আধিক্য। এগুলোর কোন মানে হয় না। অজ্ঞতার কাধে ভর করে সময়ে সময়ে সুযোগ হাতড়ে নেওয়া ছাড়া আর কিছুই না।
সবকিছুর অস্তিত্বের সন্ধান যে স্রেফ পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তার একটি উদাহরণ শুধু তুলে ধরবো। আশা করি এরপর কেউ আর অজ্ঞতার দোহাই দেবে না। অন্তত এই ক্ষেত্রে।
অভিকর্ষ, মহাকর্ষ। না ধরা যায় না ছোঁয়া যায়। আর না পঞ্চ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য। তবুও কিন্তু এর অস্তিত্ব সর্বজনীন স্বীকৃত। এরপরও কীভাবে নাস্তিকরা এই ধরনের স্বার্থোদ্ধত সূত্রের জন্ম দেয়!!
স্যার আইজাক নিউটন ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তার ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা গ্রন্থে এ বিষয়ে ধারণা প্রদান করেন৷ [১]
অভিকর্ষের কারণে ভূপৃষ্ঠের উপরস্থ সকল বস্তু ভূকেন্দ্রের দিকে আকৃষ্ট হয়। মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবেই ঝুলন্ত বস্তু মুক্ত হলে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। [২]
বিজ্ঞানী নিউটন যখন ভাবলো, সবকিছু উপর থেকে নিচে কেন আঁচড়ে পড়ে। এমন কে আছে যা সবকিছুকে নিচের দিকে অবিরাম টানছে। তখনই তিনি বিশ্বাস করে নিলেন অজানা কোন অস্তিত্বকে। আর তা হলো মধ্যাকর্ষন।
যাকে পৃথিবীর মানুষ প্রতিনিয়ত অনুভব করছে। অথচ পাত্তা দিচ্ছেনা। রীতিমত ধাক্কা দিয়ে বলছে, হে মানুষ! আমি মধ্যাকর্ষণ। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে ধাক্কার অনুভূতিকে একরকম উপেক্ষা করেই মানুষ ভাবছে, এমনি এমনি হয়তো সবকিছু উপর থেকে নিচে পড়ে! হয়তো এটাই প্রকৃতির নিয়ম!!
প্রকৃতির নিয়মের দোহাই দিয়ে এখানেই তারা জ্ঞানের দরজায় তালা মেরে দিল। আর এ ভেবেই ক্ষেন্ত থাকলো যে উপর থেকে সবকিছু এমনি এমনিই নিচে পড়ে। আসলে ‘এমনি এমনি হয়’ এই বিষয়টাই মানুষকে চিন্তা প্রতিবন্ধী করে দেয়।
মানুষ স্বভাবতই এমন। চোখে অাঙুল দিয়ে দেখিয়ে না দিলে তারা মানতে অনিচ্ছুক। আর নাগালের মধ্যে যা জানে, তাকেই ভেবে বসে চুড়ান্ত জানা। এই যে অভিকর্ষ, মহাকর্ষ এ অবদিই কি আমাদের জ্ঞান?! এর নিয়ন্ত্রণকারী কি নেই!? থাকা উচিৎ নয়!?
নিউটনের সুরে সুর মিলিয়ে আমি কি বলতে পারি না; এই বিশ্বভ্রম্মান্ড অহেতুক নয়। এমনি এমনি সৃষ্টি হতে পারে না। এমনি এমনি চলতে পারে না! নিশ্চয়ই কেউ একজন আছেন যিনি এই সমস্তকিছুর কারিগর। সবকিছুর যোগান দাতা।
সত্যমনা লেখক, Robiul Islam. পেইজ- সত্যমনা ও নাস্তিকতার মূলোৎপাটন।
Wonderful logic
উত্তরমুছুনজাজাকাল্লাহ খাইরান ভাই। আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ।
মুছুনইনশাআল্লাহ আমাদের পাশেই থাকবেন ।
মুছুন