উদ্ভাবিত মুক্তচিন্তা পূর্ণতা পাক সত্যের ছোঁয়ায় - সত্যমনা আমাদের সকল আপডেট পেতে এখনি সাবস্ক্রাইব করুন

গল্প→ অনুতাপ।

শেষ পর্যন্ত মুহিবের সাথে বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে গেলো।


এমনটা আমি ইচ্ছে করেই করেছি। আমাকে করতে হয়েছে৷ মুহিবের সমকালীন ভাবভঙ্গিমা আর আচরন আমার কাছে মোটেও বন্ধুসুলভ মনে হচ্ছিলো না৷ আমার মনে হলো এমন কারো সাথে বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখার কোন মানে হয় না।

দুপুরে যখন মুহিবকে ডেকে পরিষ্কার গলায় আমাদের বন্ধুত্বের ইতি টানার বিষয়টা জানালাম তখন একটুখানিও অবাক হলো না৷ উলটো নির্লজ্জ্বের মত হাসি হাসি মুখ করে বললো, তুই এমনটা করবি সেটা আমি জানতাম।

আমি বললাম, এমনটা কেন করলাম সেটা জিজ্ঞেস করবি না?

ইচ্ছে করছে না।

ইচ্ছে করছে না কেন?

কারন তুই আর আগের মত নেই। তোর ব্রেইন ওয়াশ হয়ে গেছে।

ব্রেইন ওয়াশ বলতে তুই কি বলতে চাচ্ছিস?

আমি যেটা বলতে চাচ্ছি সেটা অত্যন্ত সহজ একটা বিষয়।

কি তোর সেই সহজ বিষয়? যেটা আমার কাছে সহজ মনে হচ্ছে না। বলতো শুনি।

মুহিব বললো, তোর ভেতরকার সভ্যতার বিলুপ্তি ঘটে গেছে। আধুনিক চিন্তা, মননশীলতা কিছুই তোর মাঝে আর নেই। যেটা আছে সেটা হলো হাজার বছর আগেকার কিছু কুসংস্কৃতি আর অপসভ্যতা।

মুহিবের এমন কথায় আমার ভেতরকার রাগ আর ক্ষোভ আরো বাড়তে লাগলো। তার কাছে মনে হচ্ছে আমার নাকি ব্রেইন ওয়াশ হয়ে গেছে। যেটা আমার মনে হচ্ছে না। এই ব্রেইন ওয়াশের মানেটাও মুহিব খুব বাজেভাবে ব্যক্ত করেছে। সে একটা ধর্মকে আর সেই ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে প্রচন্ডভাবে আঘাত করেছে। সেই আঘাতটা এখন আমাকে সহ্য করতে হচ্ছে।

মুহিবের এমন রুচীহীন মন্তব্যে আমি যে কিছুটা আহত হয়েছি সেটা হয়তো সে ধরতে পেরেছে৷ তার মুখের বিশ্রী হাসিটা আরো চওড়া হয়ে সেরকম কিছুর-ই জানান দিচ্ছে।

আমি মুহিবের হাসি থামিয়ে দিয়ে বললাম, তুই এখন আমাকে যেই কথা গুলো বললি তোর কি মনে হয় না সেই বলা সবগুলো কথা সঠিক নাও হতে পারে।তোর কথার মাঝেও কিছু ভুল থাকতে পারে বলে কি তোর মনে হয় না?

মুহিব বেশ দৃঢ় গলায় উত্তর দিলো – না।

আমি কিছুটা সময় চুপ করে রইলাম। সে নিশ্চিতরুপে একজনের ধর্মীয় চেতনায় আঘাত দেওয়ার পরেও দৃঢ় গলায় বলছে সে কিছুই ভুল বলেনি।

মুহিবের এমন জবাবের পর তার সাথে আর কোনরকম কথা বলতে ইচ্ছে হলো না।

মুহিবের মতে আমার নাকি ব্রেইন ওয়াশ হয়েছে। অথচ তার কথিত এই ব্রেইন ওয়াশের আগে পরে আমার মাঝে কোন রকম পরিবর্তন এসেছে বলে মনে হয় না।

আমি আগেও জিন্স প্যান্ট, টি শার্ট পড়তাম,এখনও তাই পড়ছি। আগেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিশেষ জায়গায় প্যান্টের সাথে শার্ট ইন করে গলায় টাই পেচিয়ে পায়ে শো পড়ে গিয়েছি এখনও তেমনটাই করছি। আগেও নামাজ পড়েছি এখনও পড়ছি। তবে পরিবর্তন শুধু এতটুকু বলা যায়, আগে নিয়মিত নামাজ পড়তাম না। এখন পড়ি৷ আলহামদুলিল্লাহ পাচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করি। আগে রোজা রাখতাম না এখন রাখি। আমার এমন পরিবর্তনটা কি করে মুহিবের চোখে দৃষ্টিকটু মনে হলো সেটা ভেবেই আমার কষ্ট বাড়তে থাকলো।

এখন যে আমি মুহিবের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, এখানেও আমি জিন্স প্যান্ট পড়ে আছি৷ গায়ে কালো রঙের একটি হাফ হাতা গেঞ্জি।

পরিবর্তন যদি কিছু হয়ে থাকে তাহলে সেটা হয়েছে মুহিবের।

কিছু মাস আগেও তার পুরো নাম ছিলো মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান। এখন সে নামের আগে মোহাম্মদ ব্যবহার করে না। মোহাম্মদ শব্দটা তার কাছে নাকি মৌলবাদী মনে হয়। নামের শেষে রহমান কেটে রেখেছে রেহমান। একবার তাকে এর কারন জিজ্ঞাসা করেছিলাম। মুহিব বলেছে, রহমান শব্দটাতেও মৌলবাদের ছোয়া রয়েছে। এই কারনে সে নামের শেষে থাকা রহমান শব্দটা কেটে রেহমান লাগিয়েছে। এখন তার নাম মুহিবুর রেহমান।

সেদিন দুপুরের পর মুহিবের সাথে আর একদিনও দেখা করিনি। তার সাথে কথাও বলিনি।

মোবাইল থেকে তার নাম্বারটা কেটে ফেলেছি।

রাস্তায় কখনো অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখোমুখি হয়ে গেলে আমি পাশ কাটিয়ে চলে আসি। কোন কথা বলি না৷ কিন্ত মুহিব বলে। সে একতরাফই কথা বলে। তার কথা বলার ভাব ভঙ্গিমা আর মান আগের চেয়ে অনেক বেশি নিচে নেমে গেছে।

সেদিন জুমআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বেড়িয়েছি মাত্র। তখনই গলির মুখে মুহিবের সাথে দেখা হয়ে গেলো৷

আমাকে দেখেই মুহিব নিজের মুখখানির এমন এক ভাব করলো যেমনটা ঠিক নিচু শ্রেণীর লোকেরা করে থাকে।

মুখে একখানি কুৎসিত হাসি টেনে মুহিব বললো, কিরে তোর জান্নাতের টিকিট কি এখনো নিশ্চিত হয়নি নাকি? কি মনে হয়, বেহেস্তের চাবিখানি পাবি তো!

মুহিবের এমন কথায় পাশে থাকা তার বখাটে টাইপের বন্ধুগুলো গাল ফুলিয়ে হেসে ফেললো৷ আমার কাছে ওদের এই হাসিটা খুব বিশ্রী লেগেছিলো।

এক সন্ধ্যায় আমি ঘরে শুয়ে আছি। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। আষাঢ় মাসের ইলশেগুঁড়ি। খুব জোড়েও না। আবার একেবারে থেমে থেমেও না। খুব বিরক্তিকর একটা বিষয়৷ কিন্তু এই মুহর্তে আমার বিরক্তি লাগছে না। সারাদিনের পরে ক্লান্ত শরীরে বিছানায় পিঠ ঠেকিয়েছি মাত্র। ভালোই লাগছে সময়টা।

দরজার বাইরে কেউ একজন টোকা মারছে। ষ্টীলের দরজায় সে আওয়াজ খুব স্পষ্ট হয়ে আমার কানে আসছে।

এমন সময়ে কে হতে পারে সেটা ভেবে খানিকটা বিব্রত হলাম। যদিও এই বিব্রত বোধের তেমন কোন কারন নেই শুধুমাত্র মুহিব ছাড়া৷ মুহিবের সাথেতো আজকাল দেখা সাক্ষাৎ প্রায় হয় না বললেই চলে। শেষবার দেখা হয়েছিলো গত মাসের প্রথম জুমায়। মসজিদ থেকে বেড়িয়ে বাড়ি ফিরছি হঠাৎই আকস্মিকভাবে মুহিব এসে পড়লো আমার সামনে। তার সাথে আরো দুজন ছেলেকেও দেখলাম৷ এই ছেলে দুটিকে আগে কখনো দেখিনি আমি। হয়তো মুহিব নিজের নতুন বন্ধু বানিয়েছে এদের।
আমার মাথার টুপিটার ঠিক মাঝখানটায় সেলাই ছুটে গিয়ে সেখানে একটা ফাকা বৃত্তের মত সৃষ্টি হয়েছিলো। এই দৃশ্য মুহিবের চোখ এড়াতে পাড়লো না। সে কাছে এসে পা উচিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার মাথার দিকে একবার চেয়ে নিরাশ গলায় বললো, আল্লাহর দেয়া সবটা রহমত নিজের ভেতর লুফে নেওয়ার কি চমৎকার রাস্তা বানিয়েছিসরে সগির! এজন্যই তো বলি খোদার রহমত সবাই কেন পায় না। সবার মাথার টুপিতেতো আর এমন সুরঙ্গ নেই।
মুহিব যেই নিরাশ ভঙ্গিতে কথাটা বলেছে তার ভেতর মোটেও সেইরকম কোন নিরাশভাব ছিলো না। মুহিবের মত লোকেরা অন্যদের কটুক্তি করে, ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করে মজা পায়। স্রষ্টা প্রদত্ত ভালোবাসা, রহমত ইত্যাদি হাত ছাড়া হওয়ার আক্ষেপ কখনো ওদের মত মানুষের মাঝে কাজ করে না। এই বিষয়ে মুহিবের মত লোকেরা কখনো নিরাশ হয় না।

দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা খুব জ্বালাচ্ছে। কতক্ষণ ধরে একটানা টোকা মেরে যাচ্ছে৷

দেখছে ভেতর থেকে কেউ আসছে না, চলে যাই। পরে আসবো, তা না। দরজায় কিল মেরেই যাচ্ছে।

বাইরে আষাঢ়ে বাদল, মাথার উপর সিলিং ফ্যানের মৃদু হাওয়া, টিনের চালায় বৃষ্টি ফোটা ঝড়ে পড়ার সুখময় আওয়াজ। সব মিলিয়ে কি চমৎকার ঠান্ডা একটা আবহাওয়া। এমন আবহাওয়ায় খাটের উপর লম্বা হয়ে শুয়ে আছি। বুক পর্যন্ত কম্বল জড়িয়ে একটুখানি সুখের ঘুমের চেষ্ঠা করছি।

আমার সেই আরামের ঘুম আর হতে দিলো কই? আমাকে শেষ পর্যন্ত বিছানা কম্বল ছেড়ে উঠতেই হলো।

দরজা খুলতেই আমার চোখ মুখ মহা বিস্ময়ে ভরে গেলো। এ যে দেখছি মুহিব! মুহিবুর রেহমান। আমার দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে কাপছে। কাপা শরীরে ভেজা নয়নে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে৷ মুহিবের এই দৃষ্টিতে আমি অসহায়ত্বের ছাপ স্পষ্ট লক্ষ করলাম। তার চেহারাটাও কেমন যেন দুঃখী দুঃখী দেখাচ্ছে।

আমি অন্য কিছু জিজ্ঞাস করলাম না। তাকে ভেতরে আসতে বললাম।

মহিব ঘরে আসলো। এসেই ঘরের এক কোনে মেঝেতে ধপাস করে বসে পড়লো। তার গায়ে হাত দিয়ে দেখলাম ঠান্ডায় শরীর প্রায় জমে যাওয়ার মত অবস্থা। মনে হয় এই বৃষ্টিতে অনেক্ষণ ধরে ভিজেছে। মুহিবের এমন অসহায় অবস্থা আর দুঃখী মুখখানি দেখে তার প্রতি জমে থাকা রাগ আর ক্ষোভটা কোথায় যেন হারিয়ে গেলো।

আমি নিজের একটা লুঙ্গি আর গামছা মুহিবের দিকে এগিয়ে দিলাম। বললাম, শরীরটা মুছে ভেজা কাপড়গুলো পালটে নে। ঠান্ডা লেগে যাবে নয়তো।

মুহিবকে দেখে মনে হলো আমার বলা কথাটি সে শুনেনি। আমি আরেকবার বললাম, তোর ঠান্ডা লেগে যাবে। হাত-পা মুছে ভেজা কাপড়গুলো পালটে লুঙ্গিটা পড়ে নে।

মুহিব কিছু বললো না। আমার হাত থেকে লুঙ্গি বা গামছাটাও নিলো না।

তাকে দেখে মনে হলো সে কাঁদছে। চোখ জোড়া হতে গড়িয়ে পড়া কয়েক ফোটা উষ্ণ পানি তার গাল দুটিকে নতুন করে ভিজিয়ে দিচ্ছে। মুহিবের ঠোট দুটি কাপছে।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম- কি হয়েছেরে মুহিব, তুই কি কাদছিস?

মুহিব আমার কথার জবাব দিলো না। দেখতে পেলাম সে তার ভেজা হাতে প্যান্টের পকেট হতে সাদা কাগজের খামের মত কিছু একটা বের করলো।

আমি সেই ভেজা খামটা হাতে নিলাম। খামের উপরে একটা হাসপাতালের নাম রয়েছে। মনে হলো এটা একটা মেডিকেল রিপোর্ট। আমি একবার মুহিবের দিকে তাকালাম। তাহার এমন দুঃখী চেহারটাই বলে দিচ্ছিলো রিপোর্টে হয়তো ভালো কিছু নেই।

খামের ভেতরে কোন মেডিকেল রিপোর্ট পেলাম না। একটা প্রেসক্রিপশন পেলাম।
ডাঃ মোঃ সালাহউদ্দিন আহমেদ পাপন ধারনা করছেন মুহিবের বাম গালে গোল মাংসপিন্ডটা হয়তো ক্যান্সার৷ সেই কথাই তিনি এখানে লিখেছেন। সাথে একটা বায়োপসি টেস্ট দিয়েছেন।

এতক্ষণে বিষয়টা আমার ক্লিয়ার হলো। আমি মুহিবের বাম গালের পিন্ডটিতে হাত বুলালাম। আমার হাতের ছোয়া পড়তেই মুহিব আমার হাতখানি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে জোড়ালো কান্নায় ভেঙে পড়লো।

আমি মুহিবকে আশ্বস্ত করার চেষ্ঠা করলাম। বললাম, তুই শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিস কেনরে বেটা? এরকম পিন্ড কম বেশি সবার শরীরেই থাকে। আমার শরীরেও আছে।

এই বলে আমি আমার একটি হাতের অংশ তাকে দেখাতে উদ্বত হলাম। মুহিব আমাকে থামিয়ে দিলো। কান্না জড়ানো গলায় বলতে লাগলো, আমি ভালো হতে চাইরে। আমি বাচতে চাই। মরতে খুব ভয় লাগেরে সগির। আমারে তুই বাঁচা।

আমি মুহিবেকে শান্ত করতে পুনরায় ব্যস্ত হলাম। কিছুক্ষন পর তার কান্না থামলো। কান্না থামিয়ে সে আরো উদ্ভট আচরন করতে শুরু করলো। আমার দুটো পা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলছে, আমাকে তুই মাফ করে দে ভাই৷ তোর সাথে আমি অনেক ভুল করেছি, খারাপ ব্যাবহার করেছি। তুই মাফ করলে আল্লাহ আমারে সুস্থ করে দিবে।

মুহিবের মুখে আল্লাহর নাম শুনে খানিকটা অবাক হলাম। সে শুধু তার মহান রবের নামটুকুই মুখে নেয়নি৷ আল্লাহর উপর ভরসাও করছে।

বলছে, আমি তাকে মাফ করে দিলে নাকি আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দিবে।

আমি অনেকটা কষ্ট করেই আমার পা দুখানি হতে মুহিবের হাত ছাড়ালাম।

তুই আগে শান্ত হয়ে বস৷ আমার মনে হচ্ছে রোগের চিন্তায় তোর মাথা ফেল করেছে।

আমার মাথা এতদিন ফেল করেছিলো ভাই। এখন ঠিক হয়েছে৷ আমি বাঁচতে চাই। তওবা করতে চাই।

তওবা করবি ভালো কথা। তোর এমন কাজে আল্লাহ নিশ্চয়-ই খুশি হবেন। কিন্তু তার আগে তুই শান্ত হয়ে বস। কান্না থামা।

মুহিব নিজের কান্না থামিয়ে শান্ত হয়ে বসার চেষ্টা করলো। এখন তাকে দেখতে খুব ভালো লাগছে। দেখতে অনেকটা শিশুদের মত মনে হচ্ছে। শিশুদের কোন পাপ থাকে না। সবাই এদের ভালোবাসে৷ মহান রবও শিশুদের অতি ভালোবাসেন। মনে প্রশ্ন জাগলো, তবে কি আল্লাহ তায়ালা মুহিবকে হেদায়েত দান করলেন? এমনটা হলে খুব ভালো হয়। সে একসময় আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো। আমিও আমার আগের সেই বন্ধুটিকে ফিরে পেলে অনেক বেশি খুশি হবো।

মুহিব নিজের ভেজা কাপড় পালটে আমার সাথে এশার নামাজ আদায় করলো।

অনেক বুঝিয়েও তাকে আর বাড়ি পাঠাতে পারলাম না। রাতটা আমার সাথেই রয়ে গেলো। বলেছে, বায়োপসি পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগ পর্যন্ত আমি নাকি তার থেকে এক সেকেন্ডের জন্যেও দূরে যেতে পারবো না। আরেকটা কথা বলেছে, মাঝ রাতে তাকে যেন তাহাজ্জুদ এর জন্য ডেকে দেই।

আমি মুহিবকে আশ্বস্ত করলাম। পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগ পর্যন্ত আমি তার থেকে কোথাও সরবো না। রাতে তাহাজ্জুদের জন্যেও ডেকে তুলবো। দুই বন্ধু এক সাথে মহান রবের দরবারে হাত তুলবো।

মুহিব ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু আমি ঘুমাতে পারলাম না। মনের ভেতরটায় একটা আশঙ্কা বিরাজ করছে। বায়োপসি পরীক্ষার ফল ভালো আসলে মুহিব আবার আগের মত স্রষ্টা বিমুখ হয়ে যাবে নাতো। আমার ধর্মীয় বিশ্বাস, ঈমান, আখলাক নিয়ে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করতে পুনরায় ব্যস্ত হয়ে উঠবে নাতো!

কিন্তু এতসব আশঙ্কা, সম্ভাবনার মাঝেও আমি চাই মুহিবের সাথে যেন খারাপ কিছু না ঘটে। তার যেন ক্যান্সার না হয়। মহান রব যেন, এই যাত্রায় তাকে ক্ষমা করে দেয়। তার হেদায়েতের পথকে আরো সুগম করে দেয়।

সত্যমনা লেখক –
Monir Hossain.
সত্যমনা সাহিত্য পাতা।


আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিন

COMMENTS

EMAIL: 3

নাম

article,21,Atheism,34,comparative-religion,3,converted-muslim,12,current-issue,33,disproof,10,Dogma,6,dua-ruqyah,1,face-the-letter,2,feminism,13,free-thinking,9,freedom,12,Islam,2,Liberalism,4,Literature,5,question-answer,25,Quran,4,Robiul Islam Official,2,science,5,secularism,4,secularist,8,story,14,
ltr
item
সত্যমনা: গল্প→ অনুতাপ।
গল্প→ অনুতাপ।
https://1.bp.blogspot.com/--q07PlnPX8U/YTj57qB4JGI/AAAAAAAAABo/rjhQF7Ivo_gAxpQmjz5wns-XxqwtxtZmQCLcBGAsYHQ/s320/rsz_img_20210908_235525.jpg
https://1.bp.blogspot.com/--q07PlnPX8U/YTj57qB4JGI/AAAAAAAAABo/rjhQF7Ivo_gAxpQmjz5wns-XxqwtxtZmQCLcBGAsYHQ/s72-c/rsz_img_20210908_235525.jpg
সত্যমনা
https://www.sotto-mona.com/2021/09/story-repentance.html
https://www.sotto-mona.com/
https://www.sotto-mona.com/
https://www.sotto-mona.com/2021/09/story-repentance.html
true
8059754538313808851
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All জনপ্রিয় পোস্ট পড়ুন LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content