গোটা পৃথিবীতে এখন চলছে এক আজব নীতি। ডাবল স্টান্ডার্ডের নীতি। চোখ থাকিতেও মানুষ আজ অন্ধ। একই কাজ দুজন করলে স্বার্থান্বেষী এই দুনিয়া উভয়ের সাথে আচরণ করে পৃথক পৃথক। আমেরিকা করলে হয় যুদ্ধ আর আফগান করলে হয় সন্ত্রাস। ফলে একই কাজ করে দুজন বনে যায় যোদ্ধা, সন্ত্রাসী।
পৃথিবীতে অস্র ব্যবসায় নাম্বার ওয়ান আমেরিকা। ইউরোপ রাশিয়াও পিছিয়ে নেই। Dw এর শিরোনামটি দেখুন– পৃথিবী জুড়ে বাড়ছে অস্ত্র ব্যবসা৷ সবার উপরে অ্যামেরিকা৷ পিছিয়ে নেই ইউরোপ এবং রাশিয়াও৷ এই হারে অস্ত্র তৈরি বাড়তে থাকলে, ভবিষ্যতে অশান্তির সম্ভাবনা বাড়বে বলেই অভিমত বিশেষজ্ঞদের৷ [১]
আমরা জানি ব্যবসা মানুষ কেন করে; ব্যবসা একটা মানুষের অর্থনৈতিক ভিত। আর অর্থ হলো পার্থিব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই অংশকে টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষ যা কিছু ইচ্ছা করতে পারে। যেমন ইউরোপ আমেরিকা করছে। গোটা বিশ্বে চলমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মূলত কাদের লাভ বেশি? কারা চায় বিশ্বে সর্বদা দাঙ্গা-মারামারি লেগে থাকুক? আজ যদি সন্ত্রাস-মারামারির পরিবর্তে গোটা পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করে তাহলে কাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে? কাদের ব্যবসা কাদের অর্থনৈতিক অবস্থা লাটে উঠবে?
উত্তরটা খুবই সোজা– এই অস্র ব্যবসায়ীদের। যারা আফগান পাকিস্তানে বসবাস করে না। বরং বসবাস করে ইউরোপ আমেরিকার মতো সেকুলারিস্ট দেশগুলোতে।
ব্যবসার স্বার্থে পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে ক্ষেতে তাদের জুরি নেই। নিজেদের দেশগুলোকে পরিপাটি রেখে অন্য দেশগুলোতে যুদ্ধ-বিগ্রহ লাগিয়ে রাখার পিছনেই তাদের স্বার্থকতা। যার নজির আমরা দেখেছি আফগানিস্তান পাকিস্তান, ইরাক, ইরান, ভিয়েতনাম, ইত্যাদি ইত্যাদি মুসলিম দেশগুলোতে। তাদের ব্যবসা রক্ষার্থে সেখানে দিতে হয়েছে অগনিত মানবপ্রাণ। কিন্তু তারপরও যারা প্রাণ দিয়েছে তারাই সন্ত্রাসী। আর যারা প্রাণ নিয়ে ব্যবসা করছে তারা ইনোসেন্ট। সভ্য। প্রগতিশীল।
আমার কথার সত্যতা একজন বিশ্লেষকের কাছে প্রতিয়মান। তবে অজ্ঞ কিছু পশ্চিমান্ধদের জন্য ট্রাম্পের এই স্বীকারোক্তি যথেষ্ট – ''আমরা মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করেছি। শুধু আফগানিস্তানে নয়, গোটা মধ্য প্রাচ্যে মার্কিন সেনা পাঠিয়ে তারা সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য, শুধু আফগানিস্তানে নয়, গোটা মধ্য প্রাচ্যে মার্কিন সেনা পাঠানোই ভুল সিদ্ধান্ত। তার কথায়, ''আমরা মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করেছি। এর জন্য আমাদের কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। হাজার হাজার মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। সব ধ্বংস হয়েছে।'' [২]
সুতরাং কারা সন্ত্রাসী ?
যারা বিভিন্নদেশে সেনা পাঠিয়ে যুদ্ধ লাগায় তারা; নাকি যারা প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অস্র হতে নেয় তারা?
যারা ধ্বংস করতে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করে তারা; নাকি যারা স্বদেশ ও অাত্মরক্ষার্থে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয় তারা?
প্রশ্ন থেকে গেল পশ্চিমান্ধ সে-ক্যুদের কাছে।
সত্যমনা লেখক-
Robiul Islam.
তথ্যসূত্রঃ
[১] Dw - 9/12/19
[২] বিবিসি নিউজ, ইনকিলাব।
COMMENTS