গত পর্বে আমরা দেখেছি কারো বিরোধিতা করে তিনি কিছু লিখতে গেলে, সেখানে গঠনমূলক পর্যালোচনা করেন না। বরং বিদ্বেষের উপর ভর করে নিজ মতামত প্রকাশেই সীমাবদ্ধ থাকেন। যার ফলে যেকোন লেখাতেই তিনি তুমুল সমালোচিত হন।
ইসলাম সম্পর্কে তার আপত্তির জায়গাগুলোর সৃষ্টি হয় কয়েকটি কারণে। যেমন:
(১) কমনসেন্স বহির্ভূত, বাস্তবতা বহির্ভূত দৃষ্টিভঙ্গি লালন করার ফলে।
(২) পুরুষের প্রতি বিদ্বেষের উপর ভিত্তি করে।
(৩) ইসলামের অপব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে।
যেমন ধরুন- গালি দেয়া খারাপ। গালি দিলে সবাই রাগ করে। তাই গালি দেয়াটা একটা খারাপ কাজ হিসেবে চিন্হিত করা হয়েছে। এখন কারো দৃষ্টিভঙ্গি যদি হয় এমন- গালি দেয়া ভালো, গালি দিলে সে খুশি হয়। সবার গালি দেয়া উচিৎ মনে করে।
তাহলে এই বিরোধিতা হবে কমনসেন্স বহির্ভূত, বাস্তবতা বহির্ভূত দৃষ্টিভঙ্গি লালন করার ফলে। তসলিমা নাসরিনের অধিকাংশ বিরোধিতাই এই ক্যাটাগরির।
ছোট থেকে সন্তান মা-বাবার তত্ত্বাবধানে বড় হোক। সন্তান স্টাবলিস্ট হওয়া পর্যন্ত মা-বাবা তাদের দায়িত্ব নেক। এটাই তো প্রতিটি প্রাণের দাবি। তাই নয় কি!
আবার মা-বাবা বৃদ্ধ হলে তাদেরকে নিজের কাছে না রেখে বৃদ্ধাশ্রমে দেয়াটা আমরা সকলেই খারাপ মনে করি। বুড়ো বয়সে নাতিনাতনিদের সাথে সময় কাটানো একটু অবসরে থেকে সন্তানের সেবা পাওয়ার আশা প্রত্যেকটা মানুষেরই স্বভাবজাত।
তাই ইসলাম এই স্বভাবজাত মৌলিক চাহিদা পূরণার্থে সন্তানের দায়িত্ব মা-বাবাকে দিয়েছেন। এবং বৃদ্ধ বয়সে সন্তানকে মা-বাবার সেবা করার প্রতি উদ্ভুদ্ধ করেছেন।
এখন যদি কেউ কমনসেন্স বহির্ভূত বাস্তবতা বহির্ভূত দৃষ্টিভঙ্গি লালন করে বলে- ছোট কালে সন্তান মা-বাবার তত্ত্বাবধানে থাকে না বরং মা-বাবার কাছে বন্দি হয়ে থাকে। আর বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবা কে নিজের কাছে রাখাটা সেবা নয়, দাসত্বের পরিচয়।
তাহলেও এই বিরোধিতা হবে স্রেফ কমনসেন্স বহির্ভূত বাস্তবতা বহির্ভূত দৃষ্টিভঙ্গি লালন করার ফলে।
যেমনটা তসলিমা নাসরিনের দৃষ্টিভঙ্গি- সে বলে নারী দাসত্বের মতো সারাটা জীবন কাটিয়ে দেয়। ছোট কালে সে তার বাবার কাছে দাস হয়ে থাকে তারপর স্বামীর কাছে। তারপর বৃদ্ধ হলে পুত্রের কাছে। [১]
অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ এর বিপরীত। আজ পর্যন্ত কোন সন্তান দাবি জানায়নি যে, সে মা-বাবার তত্ত্বাবধানে থাকতে চায় না। বরং হাজারো শিশু বনে যায় পথশিশু এই 'আশ্রয়টুকু' না পাওয়ার ফলে।
কোন বৃদ্ধ মা-বাবা সেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে যেতে চায় না বরং প্রতিনিয়ত প্রিয়জনদের থেকে দূরে থাকার কষ্ট, হাহাকার ভেসে আসে বৃদ্ধাশ্রমে পড়ে থাকা অবহেলিত মা-বাবার।
তসলিমার এই দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হয়েছে পুরুষের প্রতি বিদ্বেষের কারণে। যার ফলে একই বিষয় বুঝাতে গিয়েও তিনি সন্তানের ক্ষেত্রে ছেলেকে ব্যতিরেকে শুধুমাত্র মেয়ের কথা আর বৃদ্ধ বয়সী বাবাকে ব্যতিরেকে শুধুমাত্র মার কথা উল্লেখ্য করেছেন।
তিনি সন্তানকে পথশিশু, স্ত্রীকে স্বামী হারা, আর বৃদ্ধ মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে কোন অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন তা আমার এই ছোট্ট গিলুতে ঢুকছে না।
সত্যমনা লেখক-
Robiul Islam.
তথ্য সূত্রঃ
[১] তসলিমা নাসরিনের বই: নারীর কোন দেশ নেই। পৃঃ ২০।
সত্যই বলেছেন
উত্তরমুছুনসুপ্রিয় পাঠক, আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মুছুন