নাস্তিক থেকে আস্তিক হওয়ার গল্প (৩)
সে বলেছে; (তার ভাষায়,)– আমি যখনই মা-বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছি—পৃথিবীতে কোনো স্রষ্টা আছে? তিনি কে? তিনি কোথা থেকে এসেছিলেন? -কোন উত্তর না দিয়ে- তারা আমাকে বলতেন, তোমার যা ইচ্ছা তুমি বিশ্বাস করতে পারো। তাদের জবাব আমাকে দ্বিধান্বিত করত।
সেখান থেকেই তার অন্তরে বিভিন্নধর্ম সম্পর্কে জন্ম নিল কৌতুহল। ধর্মকে জানার আগ্রহ। সত্যকে খুঁজে বের করার আগ্রহ। কিন্তু কীভাবে জানবে? কোত্থেকেই বা জানবে?
খ্রিষ্টধর্ম সম্পর্কে জানাটা তার জন্য খুব সহজ ছিল। কেননা কানাডা হলো খ্রিস্টান অধ্যুষিত একটা রাষ্ট্র। কিন্তু খ্রীস্টধর্ম তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। ছোট কালেই সে খ্রিস্টধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
হাই স্কুলে ওঠার পর সে ‘সোশ্যাল স্টাডিজ’ ক্লাসে ইসলাম ধর্ম বিষয়ে জানার সুযোগ পায়। তার ভাষায়–
আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে, আমাদের শ্রেণি শিক্ষক ‘ইসলামে নারীর অধিকার’ বিষয়টি কিভাবে তুলে ধরেছিলেন। তিনি আমাদের বলেছিলেন, ইসলামে নারীর কোনো অধিকার নেই, মুসলিমরা নারী শিক্ষার অধিকার অস্বীকার করে, নারীর প্রতি বৈষম্য করে এবং বলে, নারী অবশ্যই পুরুষের আনুগত্য করবে এবং পুরুষ তাকে প্রহার করার অধিকার রাখে। বিষয়গুলো আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। আমাদের শিক্ষক কী বলেছিলেন সেটা বড় বিষয় নয়; কিন্তু তার উপস্থাপন ভঙ্গিই বলে দিচ্ছিল অভিযোগগুলো সত্য হতে পারে না।
ইউরোপ যে ইসলাম সম্পর্কে কতটা ঘৃণ্য মনোভাব পোষণ করে তার কিঞ্চিৎ ফুটে উঠেছে এখানে। তারা আম জনতার মাঝে ইসলামকে টেরোরিস্ট, মানবতাহীন, অধিকার বঞ্চিত একটি ধর্ম প্রমাণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাদের এই অপপ্রচারের একটাই লক্ষ্য মানুষ যেন ঘৃণা বসত ইসলামকে জানার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
অতঃপর সে খুজতে খুজতে খালিদ নামক একজন মুসলিম ভাইকে পায়। তার কাছে সে ইসলামের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে। ইসলামে নারীর অধিকার সম্পর্কে জেনে সে অভিভূত হয়। কৌতুহলী হয়ে সে নারী অধিকার নিয়ে জানা অব্যাহত রাখে। একসময় তার মনে হয়, ইসলামই নারীকে প্রকৃত অধিকার দিয়েছে। ইসলাম গ্রহণ করার পূর্বে সে অবাক হয়ে বলেছিল;
আমি যখন ইসলাম সম্পর্কে জানছিলাম তখনও আমি ভাবতে পারতাম না, একসময় আমি এমন নারীদের একজন হবো যারা পুরো শরীর ঢেকে রাখে।
কিন্তু 'সত্য' তাকে তা মেনে নিতে বাধ্য করেছে। সে আরও বলে-
আমি যখন অন্য ধর্ম বিষয়ে পাঠ করছিলাম। আমি হতাশা, আলস্য ও আধ্যাত্মিকভাবে অন্তঃসারশূন্য অনুভব করছিলাম। মনে হচ্ছিল, আমার জীবনের বড় একটি অংশ এখনো আমার দৃষ্টি সীমার বাইরে। এরপর যখন আমি কোরআন পাঠ শুরু করি, তখন জীবনের প্রকৃত অর্থ আমার বুঝে আসে। কোরআন আমার মনে জমে থাকা সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছে এবং কোরআনে আমি এমন সব বিষয়ের সমাধান পেয়ে বিস্মিত হয়েছি, যা আমি আগে কখনো ভাবিনি। ফলে রমজানের এক সপ্তাহ আগে আমি ইসলাম গ্রহণ করি।
পরিশেষে একটা বলি আমাদের এই বোনটি সত্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে ইউরোপের সীমাবদ্ধ চিন্তা-ধারা, বেঁধে দেয়া দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে খোলা মনে ইসলামকে জানার সুযোগ পেয়েছে বলে। যেই সুযোগটা তাদের অধিকাংশরাই পায় না। কেবল পশ্চিমাদের অপপ্রচারের শিকার হওয়ার কারণে।
সত্যমনা লেখক-
Robiul Islam.
তথ্য সূত্রঃ
ইসলামিক ওয়েব।
কালের কন্ঠ। ১৫ জুলাই, ২০২১।
Alhumdulillah
উত্তরমুছুনআলহামদুলিল্লাহ
উত্তরমুছুন