নওমুসলিমের জীবন গল্প (৩) খ্রিস্টান থেকে মুসলিম।
একজন লোক লটারিতে দশ (১০) লক্ষ টাকা পেয়েছেন।
অন্য আরেকজন নিজের প্রিয়তমা প্রেমিকাকে স্ত্রী হিসেবে পেয়েছে।
এদের সাথে আরো একজন রয়েছেন। যিনি লটারিতে দশ (১০) লাখ টাকা পাননি আর না কোন প্রেমিক/প্রেমিকাকে স্ত্রী স্বরূপ পেয়েছেন!
কি, এমন প্রশ্নটা মাথায় আসছে না? কেন আসবে না, আসাটাই যে বড় স্বাভাবিক।
উত্তর হলো, ঐ তৃতীয় ব্যক্তি নিজের জীবনের আসল উদ্দেশ্য খুজে পেয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করতে পেরেছেন তার একজন স্রষ্টা রয়েছেন। মৃত্যুর পরে তাকে যেই স্রষ্টার কাছে ফিরে যেতে হবে।
এখন এই তিনজনের মধ্যে থেকে আপনি ভাগ্যবান কাকে বলবেন?
১. লটারীতে দশ (১০) লাখ টাকা পাওয়া লোক।
২. নিজের প্রিয় মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়াজ ব্যক্তি।
৩. রোমানিয়ার "লুসিয়ান কোজোকারু" যিনি নিজের স্রষ্টাকে চিনতে পেরেছেন এবং জীবনের আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেছেন!
যদি আপনার উত্তর হয় (৩) লুসিয়ান কোজোকারু, তাহলে আমার এই লেখাটি সম্ভবত আপনার জন্য-ই..
রোমানিয়ায় জন্ম নেওয়া লুসিয়ান কোজাকারু ছোট ছেকেই বেশ ধর্মভীরু। তার পরিবারটিকেও একটি প্রেক্টিসিং খ্রিস্টান পরিবার বলা যায়। কিন্তু এতকিছুর পরেও লুসিয়ানা পরিপূর্ণ স্বস্তি পাচ্ছিলো না।
একদিন দুপুরে স্কুল থেকে ফেরে লুসিয়ানা দেখলো তার মা বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। লুসিয়ানা তেমন ঘাবড়ালো না। মলিন মুখে মায়ের পাশ ঘেষে বসলো। কপালে হাত রেখে দুঃখী গলায় জিজ্ঞেস করলো, তোমার শরীরটা কি আবার খারাপ করেছে মা?
- নারে তেমন কিছু না। ব্যাথাটা আবার ফিরেছে হয়তো। তুই চিন্তা করিস না। দুয়েকদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। হাত মুখ ধুয়ে খেতে আয়।
খাবার টেবিলে লুসিয়ানা মন দিয়ে ভাবলো, যদি একটি রোগের সঠিক ঔষধের অভাবে রোগ না সারে তাহলে স্রষ্টাকে ভুল পথে ডাকলে, সঠিকভাবে তার আনুগত্য করতে না পারলে পরকালে কি করে মুক্তি মিলবে?
এই চিন্তার কথাটি মায়ের কাছে বলতেই লুসিয়ানা নিজের গালে কষে এক চড় খেলো।
মেয়েকে চড় মেরে লুসিয়ানার মা বললেন, তুই বলতে চাস আমাদের খ্রিস্টান ধর্ম ভূল? ক্ষমা চা, তুই এক্ষুণি যীশুর কাছে ক্ষমা চা। মাই গড, মাই গড! হে যীশু এই অবুঝ মেয়েকে তুমি ক্ষমা করো প্রভু।
মায়ের এমন অস্থিরতায় লুসিয়ানা বেশ বিরক্ত হলো। ধীরে ধীরে সময়ের সাথে সাথে সে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান আহরনে ব্যস্ত হলো। নবীজি ( সাঃ) এর জীবনী পড়তে লাগলো। ধীরে ধীরে লুসিয়ানা খেয়াল করলো ইসলামের প্রতি তার মনে দূর্বলতা কাজ করতে শুরু করেছে।
কিন্তু লুসিয়ানা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলো যে, যতদিন না পর্যন্ত নিজ ধর্ম (খ্রিস্টান) ছাড়ার মত প্রয়োজনীয় উপকরণ সে ইসলামে খুজে না পাবে ততদিন পর্যন্ত সে ধর্ম ত্যাগ করবে না।
আল্লাহপাক লুসিয়ানাকে দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখেননি। অতি শীঘ্র-ই তাকে হেদায়েত পাওয়া সৌভাগ্যবানদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলেন।
লুসিয়ানা নিজের সাথে সাথে নিজের মাকেও আল্লাহর পাক কালামের সত্যতা বুঝাতে সমর্থ হলো। ফলস্বরূপ মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে একটি প্রেক্টিসিং খ্রিস্টান পরিবারের মা এবং মেয়ে উভয়ে ইসলামের শান্তির পতাকাতলে নিজেদের আশ্রয় করে নিলো।
ইসলামে নিজের প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে বলতে গিয়ে লুসিয়ানা বলেছেন, নিশ্চয়ই আমি ইসলাম ধর্ম পেয়ে আনন্দিত এবং গর্বিত।
সত্যমনা লেখক-
Monir Hossain.
তথ্য সূত্রঃ parstoday.com
Alhumdulillah
উত্তরমুছুন