নাস্তিক। ইংরেজিতে বলা হয় atheist; infidel; unbeliever; heretic.
বাংলা অভিধান অনুযায়ী 'ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকারকারী'কে নাস্তিক বলে।
এভাবেও বলা যায়, যারা ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করে এবং সম্পূর্ণ ভৌত এবং প্রাকৃতিক উপায়ে প্রকৃতির ব্যাখ্যা দেয় তারাই নাস্তিক।
প্রত্যেক শিশুই জন্মগ্রহণ করেন গড এ বিশ্বাস নিয়ে। অর্থাৎ ইসলামের আলো নিয়ে। কিন্তু তাদের বাবা-মা বা অভিভাবক তাদেরকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান কিংবা নাস্তিক বানায়।
কিন্তু নাস্তিকদের আরো
হ-য-ব-র-ল ব্যাপার হলো নাস্তিকরাও এখন বিশ্বাস করতে শুরুকরেছেন প্রত্যেকটা শিশু নাস্তিকতার ওপর জন্ম গ্রহণ করে। এবং অযৌক্তিক ভাবে দাবীও করছেন। তাদের দাবী যদি সাময়িক সময়ের জন্য আমরা মেনে নিই। এখন প্রশ্ন হলো, নবজাতক শিশু সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করবে কিভাবে ? তখন নাস্তিকরা আবার বলবে, নাস্তিক দুই প্রকার। একপ্রকার "স্বজ্ঞানহীন নাস্তিকতা"য় বিশ্বাসী যেমন শিশু। দ্বিতীয় প্রকার হলো
" স্বজ্ঞান নাস্তিকতা"য় বিশ্বাসী। যেমন: যারা বুঝেশুনে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করেন।
আচ্ছা তাহলে একজন সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী ব্যক্তি যদি হঠাৎ পাগল হয়ে যায়। সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাহলে কি নাস্তিকরা তাকে ''অজ্ঞান নাস্তিক'' বলে নামকরণ করবে !? এই তো হলো মূলধারার নাস্তিকদের অবস্থা।
বঙ্গীয় নাস্তিকদের অবস্থা আরো করুণ। আরো শোচনীয়। বাংলাদেশের নাস্তিকরা অধিকাংশই নাস্তিকতান্ধ। অন্ধভাবে নাস্তিকতাকে বিশ্বাস করে। প্রমাণহীন, যুক্তিহীন নাস্তিকতাবাদের সব কনসেপ্ট মেনে নেয়।
যেমন: নাস্তিকতাবাদের মূল কনসেপ্ট 'সৃষ্টিকর্তা বা গডকে অস্বীকার' । বাংলাদেশের নাস্তিকরাও সৃষ্টিকর্তা বা গডকে অস্বীকার করেন কোনো ধরনের যুক্তি প্রমাণ ছাড়াই।
নাস্তিকতাবাদের কনসেপ্টগুলোর অন্যতম একটি হলো, 'প্রকৃতি সব কিছুর স্রষ্টা'। বাংলাদেশের নাস্তিকরাও এটা বিশ্বাস করে প্রকৃতি সব কিছুর স্রষ্টা।
কোনো কোনো নাস্তিক মনে করেন, 'জ্ঞান'ই সবকিছুকে সৃষ্টি করেছে এবং এখনো করছে। তাই সৃষ্টিকর্তা জ্ঞানকেই বলা যায়।
আবার কেউ বলেন, 'শক্তি' সবকিছুর স্রষ্টা। 'শক্তি' সবকিছুকে সৃষ্টি করেছে এবং এখনো করছে। তাই 'শক্তি'ই সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা। এগুলোকে আমরা বলতে পারি নাস্তিকদের বিশ্বাস অনুযায়ী তাদের সৃষ্টিকর্তা। তাদের সৃষ্টিকর্তা নিয়ে আরো একাধিক মতপার্থক্য রয়েছে।
তবে নব্য-নাস্তিকদের স্রষ্টা হলো 'তাদের মতের পক্ষে সমর্থক বিজ্ঞান'। কথাটা এভাবে বলার উদ্দেশ্য হলো, বিজ্ঞানকে নাস্তিকরা স্বীকার করে ততোটুকু যতটুকু তাদের মতের পক্ষে যায়। কারণ, নাস্তিকতাবাদ বিজ্ঞানের কোনো শাখা বা বিজ্ঞানবাদ নয়। নাস্তিকতাবাদ কেবল মাত্র একটা দর্শন। হাজার হাজার দর্শনের মধ্য হতে নাস্তিকতাবাদও একটি দর্শন। সুতরাং নাস্তিকদের দর্শনের পক্ষে যতটুকু যাবে ততোটুকুই তারা মানবে বা মানছে।
এ জন্য দেখা যায়, প্রতিনিয়ত যখন বিজ্ঞান ধর্মীয় নিদর্শনগুলোর দার উন্মোচন করছে। তখন নাস্তিকরা তা মেনেনিতে পারছেন না।
বাংলাদেশ সহ উপমহাদেশের নাস্তিকতাকে ডগম্যাটিক নাস্তিকতা বলা যায় । যারা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকেই স্বীকার করেন না। তবে নাস্তিকতা নাস্তিকদের হ-য-ব-র-ল এর কারণে আরো কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়।
যেমন: স্কেপটিক্যাল নাস্তিকতা। যা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করে না, তবে তারা বলে যে মানুষ তাকে জানতে অক্ষম।
ক্রিটিক্যাল নাস্তিকতা। যা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করে না, তাকে জানার ক্ষমতাকেও অস্বীকার করে না, তবে বলে যে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের কোন সঠিক প্রমাণ নাই ।
প্র্যাকটিক্যাল নাস্তিকতা যারা মনে করেন সৃষ্টিকর্তা থাকা বা নাথাকায় মানুষের কিছু নাই । সৃষ্টিকর্তা ছাড়াও মানুষ চলতে সক্ষম।
নাস্তিকদের এই নাস্তিকতাবাদ দাঁড়িয়ে আছে ঠুনকো কিছু দর্শনের ওপর। তবে নাস্তিকরা স্বস্তির ঢেকুর তুলেন নিজেকে মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়ীক ইত্যাদি ভেবে। হ্যাঁ আপনি বিশ্বাসী হয়েও মানবাধিকার কর্মী হতে পারেন। আর ভুলে যাবেন না, আপনি নিজেকে নাস্তিক পরিচয় দিয়ে নিজেই নাস্তিকতা সম্প্রদায় সৃষ্টি করছেন। এবং নিজের অজান্তেই গোঁড়া সাম্প্রদায়িক বনে যাচ্ছেন।
সত্যমনা লেখক
আহমাদ আব্দুর রাজ্জাক
সত্যমনা ডট কম
অসাধারণ
উত্তরমুছুনRight
উত্তরমুছুনRight
উত্তরমুছুননাস্তিকতা নিপাত যাক।
উত্তরমুছুন