কিন্তু নাস্তিকতার ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আহমেদ রাজিব হায়দার 'থাবা বাবা' এ পরিনত হয়ে যায়। কতোটা ভয়ংকর এই থাবা বাবা। কতোটা উগ্র এই থাবা বাবা। তার লিখনি কতোটা উস্কানিমূলক ছিলো তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
একজন থাবা বাবা বাংলাদেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমের হৃদয়ে আঘাত হেনেছেন। হৃয়দে রক্তক্ষরণ করেছেন। এমনকি যারা ধর্ম থেকে অনেকটা দূরে, এই থাবা বাবার লেখা পড়ে তারাও হকচকিয়ে উঠেছেন।
নাস্তিকতার ভাইরাসে আক্রান্ত আহমেদ রাজিব হায়দার ওরফে থাবা বাবা যা লিখতেন। তা বইয়ের পাতায় উঠার অনুপযুক্ত। তবুও আগামী প্রজন্মকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে তার দু'চারটি আর্টিকেল তুলে ধরা হচ্ছে। যেন মানুষ জানতে পারে নাস্তিকতা আসলে কী! নাস্তিকতার ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মানুষ কতোটা দেওলিয়া হতে পারে।
থাবা বাবার কিছু আর্টিকেল _
১
ঈদ মোবারক আর ঈদের জামাতের হিস্টরি : খাদিজার হাতে ধরা খাইয়া মোহাম্মকের টানা একমাস খানা খাইদ্য সাথে দাসী বান্দী পুরাই অফ আছিল (সিয়াম সাধনার ইতিবৃত দ্রষ্টব্য) তার জেলখানার মেয়াদ শেষ হইতে না হইতেই এক দৌড়ে বাইর হইয়া সরাসরি পাবে জমজমে চইলা গেল। এতো দিনের না খাওয়া বান্দা তাই বেসামাল আরবি টানলো হাউশ ফুরাইয়া। তার পর তার সেই চিরাচরিত কাবাঘরের সামনের চত্বরে সাথে তার ইউজুয়াল ইয়ার-দোস্তরা। মোহাম্মক তো টাল স্বপ্নে উম্মেহানীর গুহায় ডুবসাঁতার কাটতে ডাইভ দিছে, আর তার পুরা একমাস ‘মোহাম্মক-মধু’ বঞ্চিত দোস্তরা তাদের কঠিন ইমান লইয়া মধুর ভাণ্ডের ওপর ঝাপায় পড়লো। সবাই আরবি খাওয়া ছিল, তাই টাল সামলাইতে না পাইরা কেউ কেউ মোহাম্মক মনে কইরা অন্যদের মধুও খাওয়া শুরু করলো। যথারীতি সকাল বেলা মোহাম্মক ঊর্ধ্বপোঁদে মধুদ্বার চেগায়া পইড়া থাকলো জ্বালাপোড়া ঠেকাইতে, আর তার পিছে তার ইয়ার দোস্তরা। কারণ টাল হইয়া কে যে কার মধু খাইয়া ফালাইছে তার হিসেব আছিল না, তাই সবারই পশ্চাদ্দেশ ব্যথা। এই দিকে খাদিজা বিবি শিবলি থুক্কু সুবেসাদিকে তার মুবারক নামক ভৃত্যের কাছে খবর পাইলো তার পাতিনবী পতিদেব কাবা ঘরের সামনে আরবি খাইয়া ইয়ারদোস্ত লইয়া পুন্দাপুন্দি করতাছে। কোনোরকমে তুপটা গায়ে জড়ায়া মুবারকরে লইয়া দিল দৌড়। তার যা মেজাজ তখন, হাতের কাছে থান ইট পাইলে মোহাম্মকের মস্তক শরীফ আস্তা থাকার কথা না। খাদিজা দৌড়াইতাছে, সামনে মুবারক দৌড়াইতাছে আর খাদিজা চিল্লায় চিল্লায় কইতাছে ‘মুবারক ইট, মুবারক ইট’, মানে মুবারকরে ইট নিতে কইতাছে মোহাম্মকের মাথা থ্যাতলানের জইন্য। কিন্তু তখনো তো পোড়া ইট আরবে ঢোকে নাই, তাই মুবারকও ইট খুঁইজা পায় নাই। এই দিকে চিল্লাপাল্লা আর খাদিজার ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় দেইখা মানুষজনও তাদের পিছে পিছে যাওয়া শুরু করলো মজমা দেখতে। কিন্তু কাহিনী তো তারা জানে না, তারা শুধু শুনছে খাদিজা চিল্লাচ্ছে ‘ইট মুবারক, ইট মুবারক’!!!
কাবা প্রাঙ্গণে গিয়া দেখে মোহাম্মক আর তার পিছে সবাই লাইন ধইরা ঊর্ধ্বপোঁদে পজিশিত। মক্কাবাসীরে মোহাম্মক আগেই বুঝায় রাখছে যে ঐটা হৈল নামাজের সিজদা (সিজদা দ্রষ্টব) তাই তারা আসল কাহিনী ধরতে না পাইরা মনে করল ইটের দিন জামাতে সিজদা দেওন লাগে আর চিল্লায় চিল্লায় ইট মুবারক কওন লাগে! সেই থেকে একমাস না খায়া থাইকা পরের দিন ঊর্ধ্বপোঁদে নামাজ পরা আর ইট মুবারক বলার রীতি শুরু হইল, আর কালক্রমে শব্দবিচ্যুতির কারণে ইট হয়ে গেল ঈদ!
২
ঢিলা ও কুলুখ
‘বাবা মোহাম্মক তোমাকে যুদ্ধে যাইতে হইপে।”
‘কেনু কাক্কু?’
‘যুদ্ধে না যাইলে যে আমাগের না খাইয়ে মরিতে হইপে বাবা!’
‘আচ্ছা তবে যাইব। কিন্তুক আমাকে কোথায় খাড়াইয়া যুদ্ধ করিতে হইপে? সামনে খাড়ায় নাকি পিছনে?’
‘মনে করো সামনেই খাড়াইতে হইপে’
আমারে কি উষ্ট্রী দেয়া হইপে নাকি খাড়ার ওপরে পলাইতে হইপে? উষ্ট্রী দিলে কোন কথা নাই, কিন্তু খাড়ার ওপরে পলাইতে হইলে দুইখান কথা আছে।’
‘তোমাকে খাড়ার ওপরই পলাইতে হইপে।’
‘আমি যদি পলাইয়া মক্কা চলিয়া আসিতে পারি, তাহা হইলে কুনু কতা নাই, কিন্তু কাফেররা ধরিয়া ফেলিলে দুইখান কতা আছে।’
‘মনু করো তাহারা তোমাকে ধরিয়া ফেলাইপে’
‘কাফের রমণীরা আমাকে তাহাদের গনিমতের মাল বলিয়া ব্যাবহার করিপে নাকি আমার কল্লা কাটিয়া ফেলাইপে।’
‘কল্লাই কাটিল না হয়, তুমার যা সাইজ ইউজ কেউ করিপে না’!
‘আমাকে কাটিয়া শকুন দিয়া খাওয়াইপে নাকি কব্বর দিপে!’
‘তাকে কব্বরেই পাঠাবে রে বাবা!’
‘আমার কবর কি মরূদ্যানে দেবে নাকি মরুতে? মরুতে দিলে কতা নাই, কিন্তু মরূদ্যানে দিলে দুইখান কতা আছে!’
‘দরকার হইলে মি তুমাকে মরুত্থে তুলে নিয়ে মরূদ্যানে লইয়া আসিপ!’
‘কাক্কু কব্বরে কি খাইজুর গাছ লাগাইপে নাকি বাবলা বেরেক্ষ?’
‘বাবলা বেররেক্ষ হইপে বাবা!’
‘সেই বাবলা গাছে কি জ্বালানি কাষ্ঠ হইপে নাকি কাগজ?’
‘কাগজই হইপে’
‘কি কাগজ কাক্কু? লিখিপার জইন্য বেদাতী কাগজ নাকি টিস্যু’
‘টিস্যুই না হয় হইপে!’
‘সুরত মুছিপার টিস্যু কাক্কু, নাকি এস্তেঞ্জা করিপার?’
প্রশ্নবানে জর্জরিত কাক্কু আপদুল্লা বুঝিয়াছে বাস্তে মোহাআম্মক ভাগার তাল করিতেছে, তাই ক্ষেপেছে বে, ‘এস্তেঞ্জা করিপারই হইপে তোর মতো চুরাকে কি কেউ মাথায় করিয়া রাখিপে?’
‘তাহা হইলে কাক্কু সে টিস্যু কি পুরুষে ব্যবহার করিপে নাকি নারীতে?’
‘তুই কি তছলিমা নাসরীন যে নারী পুরুষে ভেদাভেদ করিয়া দিলি?’
তরুণ মোহাম্মক তাহার প্রশ্নবাণ শেষ করিবার আগেই কাক্কু তাহাকে চাক্কু দেখাইয়া যুদ্ধে পাঠাইয়া দিলো। কেই বা এমন প্যাচাল শুনিতে চায়! মোহাম্মকের সম্যক প্রশ্ন সত্ত্বেও তাহাকে যুদ্ধে যাইতে হইলো জীবনের শেষ পর্যন্ত তাহার যুদ্ধে মরিয়া নারীকূলের ব্যবহার্য টিস্যু হইবার ভয়ে কাটিয়াছে। তাই শেষ পর্যন্ত টিস্যু, মায় জলগ্রহণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করিয়া ঢিলাকুলুখ ও পাত্থর ব্যবহারের রীতি প্রদান করিয়া তবে শান্তি পাইলো! সেই থেকে লিকুইড এস্তেঞ্জার পরে ঢিলাকুলুখ (এক্ষেত্রে নারীকূলের কথা ভাবা হয় নাই) ও সলিড এস্তেঞ্জার পরে ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩ ইত্যাদি সংখ্যক পাত্থর ব্যবহার মুসলমানদিগের জন্য ফরজ হইয়া গেল
৩
সিজদা
মোহাম্মক তাহার ইয়ার দোস্ত লইয়া প্রায়শই কাবা প্রাঙ্গণে আরবি খাইয়া (মদ বিশেষ) পড়িয়া থাকিত। মোহাম্মদ যখন বেহুঁশ হইয়া পড়িয়া রহিত, তখন তাহার ইয়ার দোস্তরা এই গোল্ডেন অপরচুনিটি মিস করিবে কেন? সবার তো আর উম্মেহানী নেই।
ইয়ার-দোস্তদিগের গোল্ডেন অপরচুনিটির শিকার হইয়া সুবে-সাদিকের সময় ঘুম ভাঙ্গিলে রেকটাম-প্রদাহের ঠ্যালায় মোহাম্মকের পক্ষে চিত-কাইত হইয়া শয়ন করা বাস্তবিক অসম্ভব হইয়া দাঁড়াইতো। তাই পশ্চাদ্দেশের আরামের নিমিত্তে সে ঊর্ধ্বপোঁদে রেকটামের স্ফিংকস্টার পেশি চেগাইয়া পড়িয়া থাকিত। এমতাবস্থায় কেউ দেখিয়া ফেলিলে চাপা মারিত যে, সালাত আদায় করিতেছে আর এই ভঙ্গিটির নাম সিজদা।
সেই হইতে মুসলমানের জন্য ঊর্ধ্বপোঁদে সিজদার প্রচলন শুরু হইয়াছে!
৪.
ইফতারি ও খুর্মা খেজুর
একদা মোহাম্মক তাহার ৩০০ মিলিওন বছরের পুরান পাবলিকা মডেলের গাধায় চড়িয়া দাফতরিক কাজে মক্কার উপকণ্ঠে বনি লুবর-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানের দিকে যাইতেছিল। তাহার মেজাজ যাহারপরনাই খারাপ। যাতায়াতের নিমিত্তে খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড মডেলের লিমোজিন উষ্ট্রীটিকে সে পায় নাই। খাদিজা তাহাকে পতিত্ব দান করিয়া শরীরের অধিকার দান করিলেও দাফতরিক কার্যে কেরানি অবধিও পদোন্নতি দান করে নাই। মক্কার সর্বাপেক্ষা ধনী ব্যবসায়ীর পতি নবী হইলেও তাহাকে অদ্যাবধি সশরীরে মরুভূমিতে দুম্বা চড়াইতে যাইতে হয়। পদোন্নতি ঘটিবে এমন সম্ভাবনাও সুদূর পরাহত। ইকরা পাস করিলে পদোন্নতি ঘটার কথা, জেব্রাইলের উত্তম-মধ্যম খাইয়া ইকরা পাসও করিয়াছিল, কিন্তু খাদিজার ‘ইমতিহান’এ ফেল মারিয়া থোড় বড়ি খাড়াতেই রহিয়া গিয়াছে, খদিজা বিবি তাহার পদোন্নতি আটকাইয়া দিয়াছে।
আজকের ট্রিপটিতে মোহাম্মক নিজে না গিয়া সাকরেদ আবু বকরীকে পাঠাইতে মনস্থ করিয়াছিল, কিন্তু খাদিজা তাহার হস্তে ‘কনফিডেনশিয়াল’ কণ্টকখচিত খেজুরপত্রের আঁটি ধরাইয়া সব মাটি করিয়াছে। তাহার হেরা গুহায় গিয়া নাসিকায় উষ্ট্র চর্বির তৈল ঘষিয়া দিবানিদ্রার দ্বাদশ ঘটিকা বাজাইয়া দিয়াছে। তথাপি অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাহাকে বাহির হইতে হইলো। বাহির হইবার মুখে একবার মনস্থ করিল খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চন্দ্রাতপ আঁটা উষ্ট্রীখানিকে যাতায়াতের নিমিত্তে লইয়া যাইবে, কিন্তু তাহার কিছু বলিবার আগেই খাদিজা বিবি তাহার হস্তে বসিবার গদিবিহীন পাবলিকা গাধার রজ্জু ধরাইয়া দিল। বনি লুব-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানে যাইতে যাইতে এসব কথা ভাবিয়া খাদিজা বিবির চতুর্দশ গুষ্টির পিণ্ডি উদ্ধার করিতেছিল সে। কনফিডেনশিয়াল না ঘেচু। উষ্ট্রের গায়ে মর্দন করিবার উত্তম তৈলের একচেটিয়া কারবার বনি লুবর-ই-কান গোত্রের। সুদূর মেসোপটেমিয়া হইতে আমদানি করা বিশেষ কাস্তারি ব্র্যান্ডের তৈল না হইলে খাদিজা বিবির ইম্পোর্টেড লিমোজিন মডেলের উষ্ট্রীর গাত্র কুটকুট করে। তাই ঐ তৈল না হইলে হয় না। কিন্তু এবারের চালানে মক্কার কেন্দ্রীয় চুঙ্গীঘরকে গোপন করিয়া বেশ কিছু মিশরীয় উষ্ট্রী আসিয়াছে। তাই মক্কার মুসক বিভাগ তাহার পিছে পড়িয়া গিয়াছে উপযুক্ত মুসক আদায়ের লক্ষ্যে। কনফিডেনশিয়াল খেজুর পত্রে বনি লুবর-ই-কান গোত্রাধিপতিকে নির্দেশ প্রদান করা আছে যে, কয় অ্যাম্ফোরা তৈল খাদিজা বিবি ক্রয় করিয়াছে তাহা যেন কুরাইশ মুসক বিভাগের অ্যাম্ফোরা গণকদিগের এনকোয়ারিতে গোপন রাখা হয়, নইলে তাহারা অ্যাম্ফোরা গুনিয়া উষ্ট্রীর মুসক হিসাব করিয়া ফেলিবে।
মোহাম্মক বনি লুবর-ই-কান গোত্রের মরূদ্যানের নিকটবর্তী হইতেই দেখিল গোত্রাধিপতির তাম্বুর সম্মুখে মুসক বিভাগের চারিখানা উষ্ট্র দণ্ডায়মান। অ্যাম্ফোরা গণকেরা মোহাম্মকের পূর্বেই আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। এই অবস্থায় গাত্র ঢাকা দেয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নাই। খাদিজার খেজুর পত্র তাহাদের হাতে পড়িলে সমূহ বিপদ। কাকা আবু তালিব বিন আবদুল মুত্তালিবও তাহাকে উদ্ধার করিয়া আনিতে পারিবে না। মোহাম্মক গাধা ঘুরাইয়া আবার মক্কাভিমুখে রওয়ানা হইলো, কিন্তু ততক্ষণে মুসক বিভাগের গণকেরা তাহাকে দেখিয়া ফেলিয়াছে। কিন্তু ততক্ষণে মোহাম্মকও বেশ দূরে চলিয়া গিয়াছে। কিন্তু তাহার পাবলিকা গণকদিগের রেসিং উষ্ট্রের সহিত পারিবে কেন? তাই মোহাম্মক গাধা ঘুরাইয়া নিকটবর্তী পাথরের স্তূপের দিকে ধাবিত হইল। সেই স্থানে পৌঁছাইয়া মোহাম্মক তাড়াতাড়ি তাহার পাবলিকা গাধাটিকে একটি বৃহত্ প্রস্তরের আড়ালে লুকাইয়া নিজে একটি গুহায় গিয়া আত্মগোপন করিল। গণক বাহিনী চলিয়া গেলে সে বাহির হইয়া মক্ষা প্রত্যাবর্তন করিবে। কিয়ত্কাল পরে গণকেরা চলিয়া গেলে মোহাম্মক ধীরে ধীরে গুহা হইতে বাহির হইয়া বোকা গর্ধবটিকে লইয়া মক্কার পথে রওয়ানা হইল। একে তো কার্য সমাধা হয় নাই, তাহার ওপর পাবলিকা গর্ধবের পৃষ্ঠে কোনোরূপ গদি নাই। তাহার পশ্চাদ্দেশে গাধার মেরুদণ্ডের ভার্টিব্রা যেন খেজুর বিচির ন্যায় বিঁধিতে লাগিল। গর্ধবের চেনা পথ, তাহাকে পরিচালিত করিবার প্রয়োজন নাই বিধায় মোহাম্মক গাধার পৃষ্ঠে তন্দ্রাচ্ছন্ন হইয়া পড়িল।
মক্কার মূল পথে উঠিবার ঠিক পূর্বে একটি ক্ষুদ্র মরূদ্যান পার হইবার সময় হঠাত্ করিয়া একটি খেজুর ঝোপের আড়াল হইতে চারিখানা উষ্ট্র আসিয়া তাহার গতি রোধ করিয়া দাঁড়াইল। মোহাম্মক চমকিয়া উঠিল, সেই অ্যাম্ফোরা গণকের দল। তাহারা মোহাম্মককে তাহার তুপ (আরবীয় আলখাল্লা) ধরিয়া নামাইয়া মরূদ্যানের অভ্যন্তরে খেজুর পত্রের তৈরি একখানি নড়বড়ে কুটিরে লইয়া গেল। তাহার পর তাহাকে ভূমিতে ভূলুণ্ঠিত করিয়া খেজুর পত্রের রজ্জু দ্বারা উত্তম রূপে গ্রন্থিত করিয়া জেরা শুরু করিল, খাদিজা বিবি কয়খানা মিশরীয় উষ্ট্রী ইম্পোর্ট করিয়াছে। মোহাম্মকও বলিবে না, অ্যাম্ফোরা গণকেরাও ছাড়িবে না। প্রহর দেড়েক কাটিয়া যাইবার পরেও তাহারাদিগের প্রধান মোহাম্মকের নিকট হইতে কোনো বাক্য উদ্ধার করিতে না পারিয়া শেষে অধস্তন একটি সাকরেদকে নির্দেশ প্রদান করিল যে বাহিরে সবচাইতে বড় যেই ফল পাইবে, তাহাই যেন সত্বর লইয়া আসে। অধস্তন গণনাকারী কিছুক্ষণের মধ্যেই এক কাঁদি হরিদ্রা রঞ্জিত বৃহত্ খেজুর লইয়া হাজির হইল। মোহাম্মকের খেজুর দেখিয়াই ক্ষুধা চাগাইয়া উঠিল। যেই সে এই কথা বলিতে যাইবে, অধিপতি বলিল, ‘তুই আবু তালিব বিন মুত্তালিবের ভাতিজা বলিয়া আজ ছাড়িয়া দিতাছি, তথাপি পরবর্তীতে যেন কোনরূপ মুসক দানে অপারগতা প্রকাশ না করিস, তাই কিঞ্চিত্ আগাম সতর্কবার্তা দিয়া ছাড়িয়া দিতাছি।’ তাহার পর চার ষণ্ডা মিলিয়া আল্লার পেয়ারা নবীকে উপুড় করিয়া তুপ তুলিয়া একটা একটা খেজুর ভড়িতে শুরু করিল। মোহাম্মক খেজুর গ্রহণের তীব্র বেদনায় আর্তনাদ করিয়া উঠিল, তাহার পর সে অনুধাবন করিল যে, সে আসলে তাহার পাবলিকার পৃষ্ঠে তন্দ্রার ঘোরে দুঃস্বপ্ন দেখিয়াছে, আর তাহার পৃষ্ঠের ভার্টিব্রা তাহার পশ্চাদ্দেশে শক্ত খেজুরের ন্যায় খোঁচা মারিয়া যাইতেছে অনবরত।
তন্দ্রা ভাঙিয়া দুঃস্বপ্ন উপলব্ধি করিবার পরপরই সে দেখিল, সে গৃহের সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। তড়িঘড়ি করিয়া পাবলিকা হইতে অবতরণ করিয়া অসার পশ্চাদ্দেশে হাত বুলাইতে বুলাইতে ভাবিল, তাহার নসিবখানা নিতান্তই প্রসন্ন যে, সে আরব ভূমিতে জন্মিয়াছে। নচেত্ বাঙ্গালদেশের কাঁঠাল, দাক্ষিণাত্যের নারকেল বা নিদেনপক্ষে পারস্যের আখরোট গ্রহণ করতঃ তাহার রেকটামের দ্বাদশ ঘটিকা বাজিয়া যাইত। তাই সে আরব ভূমিতে জন্মগ্রহণের নিমিত্তে আল্লাকে শুক্রাণু থুড়ি শুক্রিয়া আদায় করিয়া মুচকি মুচকি হাসিয়া ফেলিল। ঠিক এই সময় আবু-বকরী একঝুড়ি হরিদ্রা রঞ্জিত বৃহত্ খেজুর লইয়া খাদিজা বিবির গৃহদ্বারে আসিয়া উপস্থিত হইল, উপরন্তু মোহাম্মককে আল্লার কাছে শুক্রিয়া আদায় অবস্থায় আবিষ্কার করিল। মোহাম্মকের শুক্রিয়া আদায় সমাপ্ত হইলে সে জিজ্ঞাসা করিল, ‘হে রাসুলে খোদা, এই শুক্রিয়া আদায়ের নিমিত্ত সম্পর্কে কি আমি জ্ঞাত হইতে পারি?’ রাসুলে খোদা তাহার দিকে ফিরিয়া হস্তের ঝুড়িটির দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া মৃদু হাস্যে বলিল, ‘ইয়া আবু বকরী, তুমি নিশ্চয়ই আল্লার শুক্রিয়া আদায় করো, কারণ তুমি জান না আল্লা তোমাদিগের জন্য রমজানের ইফতারিতে কি তিনখানা বস্তু নেয়ামত স্বরূপ পাঠাইয়াছে।’
বকরি সুধাইলো, ‘কি সেই তিনখানা বস্তু খোদাবন্দ?’
মোহাম্মক রিপ্লাই করিল, ‘তাহার প্রথমটি হইলো খেজুর কাঁঠাল নয়, বল আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা’
‘দ্বিতীয়টি হইলো খেজুর নারিকেল নয়, বলো আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা।’
তৃতীয়টি হলো খেজুর আখরোট নয়, বলো, ‘আলহামদুলিল্লা।’
বকরি বলিল, ‘আলহামদুলিল্লা।’
এই বলিয়া মোহাম্মক আবু বকরীর নিকট হইতে খেজুরপূর্ণ ঝুড়িখানা হস্তগত করিয়া গৃহাভ্যন্তরে অন্তর্নিহিত হইলো আর বকরী আল্লা ও তার রাসুলের গুণে মুগ্ধ হইয়া এই আশ্চর্য সুসংবাদ তামাম জাহানের মুসলমানদিগের নিকট পৌঁছাইয়া দিতে বাহির হইয়া পড়িল!
৬.
সিয়াম সাধনার ইতিবৃত্ত
সে অনেক কাল আগের কথা। আরবের লোকেরা তখন আল্লাকে ভুলিয়া গিয়াছিল। ভোলে নাই কেবল একজন, মহামতি মোহাম্মক। তাহাও খোদাতালা তাহাকে জেব্রাইল প্রেরণ করিয়া উত্তম মধ্যম সহযোগে ইয়াদ করাইয়া না দিলে তাহারও আল্লার কথা ইয়াদ করিতে বেগ পাইতে হইতো। তা সেইবার জেব্রাইলের মধ্যম উত্তমরূপে খাইয়া তাহার ভয়ানকরূপে বাহিরে বালিয়াড়ির আড়ালে যাইবার বেগ চাপিয়াছিল কিনা আমাদিগের নিশ্চিত জানা নাই, তবে তাহার বৃদ্ধা পত্নী খাদিজা হইতে বর্ণিত যে, সেবার পর্বত-পাদদেশ হইতে ভেড়া লইয়া ফিরিবার পর সবরী থুক্কু পেয়ারা নবী বেশ কিছু দিবস শয্যাশায়ী ছিলেন। যাহা হউক, তাহার বেশ কিছুদিন গত হইবার পর আজিকার এই কাহিনীর আরম্ভ।
হেরা গুহায় জেব্রাইলের উত্তম মধ্যম খাইয়া মোহাম্মদের আল্লার কথা মনে পড়িয়াছিল বটে। আধুনিক বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের মাথায় ডান্ডার বাড়ি খাইয়া ইয়াদ্দাশ ফেরত আসিবার গল্প বোধ করি ১৪০০ বত্সর পূর্বের মোহাম্মকের উত্তম মধ্যম খাইবার ঘটনা হইতেই আসিয়াছে। তবে স্মৃতি ফিরাইবার ক্ষেত্রে উত্তম মধ্যম যে কীরূপ কার্যকর তাহা মোহাম্মকের ঘটনা হইতেই উত্তমরূপে প্রতীয়মান হয়। সেই স্মৃতি এমনই বলশালী হইয়া ফেরত আসিয়াছিল যে মোহাম্মক তাহার বাকি জীবন আল্লার শবরী কলা হিসাবেই কাটাইয়া দিবার নিমিত্তে নিজেকে উত্সর্গ করিয়া দিয়াছিল। তবে তাহার আল্লার দূত হইবার সমস্ত আয়োজনই এক কথায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হইয়া যাইতে বসিয়াছিল তাহার পত্নী খাদিজার উপস্থিতিতে। খাদিজা তাহার পতি-নবীকে হস্তে রাখিবার নিমিত্তে তাহার সমস্ত কথাই বিনা বাক্যব্যয়ে মানিয়া লইয়াছিল ঠিকই, তথাপি তাহার কথায় কদাচিত্ বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছে। আর মোহাম্মক যেইরূপ প্রায়শই তাহার ব্যবসায়িক তহবিল তছরুপ করিত, তাহাতে তাহার আল্লার সাক্ষ্যও খুব একটা কার্যকরী হইতে পারিছেলিন না। অপর হস্তে খাদিজা প্রেমময় পত্নী হইলেও বিষয়বুদ্ধিতে ছিলেন খুব কড়া। পতিনবী মোহাম্মককে পরমাত্মীয় বলিয়া ক্ষমা করিবার পাত্রী খদিজা ছিলেন না। তাই প্রতিবারই সে তহবিল হোক চাই কি ভেড়ার পাল, তছরুপের দায়ে মোহাম্মককে শাস্তি পাইতে হইতো। তা সে পিঠে হালকা পাদুকা বৃষ্টি নতুবা পানাহার রহিতকরণ।
সেইরূপ একদা মোহাম্মক পত্নী খাদিজার অনুমতি ব্যতিরেকে আস্ত একপাল উট আল্লার পথে উত্সর্গ করিয়া বসিয়াছিল, যদিও তাহার কোন চাক্ষুস প্রমাণ উপস্থিত করিতে ব্যর্থ হওয়ায় খাদিজা তাহাকে শাস্তিস্বরূপ এক চদ্রকাল দিবাভাগের পানাহার রহিত করিয়া তাহাকে শাস্তি প্রদান করিয়াছিল। সূর্যোদয় হইতে সূর্যাস্ত তাহার নিকট পানাহার প্রেরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই, দাসীদিগের ওপরেও মোহাম্মকের নিকট না যাইতে কড়া হুকুম জারি করিয়া দিয়াছিলেন। তাই খাবার ও দাসী উভয় হইতেই মোহাম্মক বঞ্চিত হইতেছিল। দিবাভাগ ব্যতীত পানাহার ও দাসীর সমব্যভিহারে কোন নিষেধাজ্ঞা খাদিজার নির্দেশনামায় না থাকিলেও খাদিজা মহাম্মকের কর্মকাণ্ডের প্রতি কঠিন পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করিয়া রাখিয়াছিলেন। তাহাতে মোহাম্মক বেজায় বেকায়দায় পড়িয়াছিল।। খাদ্যে তাহার সেন্সরশিপের সহিত খাদিজাকে গোপন করিয়া কচিত্-কদাচিত্ দাসী নতুবা বগ্নি উম্ম-হানীর সাহচর্য লাভের সুযোগও রহিত হইয়া বসিল।
এমতাবস্থায় শিশ্নের ক্ষুধা চাপিয়া রাখিতে পারিলেও আরবস্থলির ক্ষুধা নিবারণ ক্রমশ কঠিন হইয়া যাইতেছিল। সূর্যাস্তের পরে ও নিদ্রাপূর্বক আহার ব্যতীত অন্যরূপ আহারের অভাবে মোহাম্মক উদরে প্রস্থরবন্ধনী লইতে বাধ্য হইয়াছিল। তথাপী তাহার ক্ষুধা নিবারণে অন্যরূপ সমস্ত উপায়ও খাদিজা রহিত করিয়া রাখিয়াছিলেন। এমতাবস্থায় রাত্রি দ্বিপ্রহরে লোকচক্ষুর অন্তরালে চুপি চুপি খাদিজার হেঁসেল হইতে চৌর্যবৃত্তি ব্যতীত আর কোন গত্যন্তর ছিল না।
কিন্তু কথায় যেরূপ বলিয়া থাকে যে মোহাম্মকের বিংশ রজনী ও খাদিজার এক, সেরূপ শাস্তির বিংশত রজনী দ্বিপ্রহরে মোহাম্মক খাদিজার হস্তে রঞ্জিত হস্তে ধরা পড়িয়া গেল। তাহাতে লোক জানাজানিও কম হইলো না। ঘৃহের অভ্যন্তরে কোনরূপ মান-সম্ভ্রম কোনকালেই মোহাম্মকের ছিল না, কিন্তু মক্কা নগরীর জনগণের নিকট আল্লার একমাত্র সেবকরূপে তাহার বিশেষ পরিচিতি বজায় ছিল। তাহার ওপর মোহাম্মকের গোপন কারোবার হিসেবে একখানা অর্থের বিনিময়ে আমানত-গাহ বিশেষ খ্যাতিপ্রাপ্ত হইয়াছিল ও তাহার গুডউইল হিসাবে তাহার কপালে আলামিন খেতাবও জুটিয়া গিয়াছিল। এমতাবস্থায় চৌর্যবৃত্তির সহিত তাহার সংস্রব প্রমাণিত হইলে তাহার যত্সামান্য এক্সট্রা ইনকামও রহিত হইয়া কদাচিত্ খাদিজার আরালে ইয়ার দোস্ত লইয়া আমোদ স্ফুর্তি করিবার পথও রহিত হইয়া যাইবে। তাই তাহার আমানতগাহ এবং আলামিন উপাধি রক্ষার্থে তাহাকে সর্বসমক্ষে একখানা চাপা উপস্থিত করিতে হইলো, তাহা হইলো ঐ একচন্দ্র সময়কাল যাহাকে স্থানীয় ভাষায় রমজানুল চন্দ্র বলা হইতো আল্লাহ তাহাকে সিয়াম সাধনা করিতে নির্দেশ দিয়াছেন। আর এই সিয়াম সাধনার তরিকা হইলো রাত্রি দ্বিপ্রহরে আহার্য সাধন করিতে হইবে, তাহার পর সূর্যাস্তের পরে আবার আহার্য গ্রহণের অনুমতি মিলিবে। এই সময়ের মধ্যে কোনরূপ পানাহার ও নারীগমন নিষিদ্ধ। সেই হইতে মোহাম্মকের চৌর্যবৃত্তি ঢাকিতে প্রদত্ত চাপা অনুসরণে মোহাম্মকের বিশাল উম্মক-বাহিনী অদ্যবধি রমজানুল চন্দ্রে সেইরূপ পানাহার ও নারীগমনে বিরত থাকে এবং সূর্যাস্তের পরে ও রাত্রি দ্বিপ্রহরে খাদ্যগ্রহণে প্রবৃত্ত হয়। এই বিধানকেই আমরা পবিত্র সিয়াম সাধনা বলিয়া মানিয়া থাকি।
অন্যদিকে চৌর্যবৃত্তির শাস্তিস্বরূপ তাহার খাদ্য রহিতকরণের বিংশ দিবসের পর হতে অবশিষ্ট চন্দ্রদিবস সমূহতে খাদিজা মোহাম্মককে কক্ষে অন্তরীণ করিয়া রাখিয়াছিলেন, যা হোক অদ্যাবধি আমরা ইতিকাফ বলিয়া পালন করিয়া থাকি।
ব্লগার রাজীব ওরফে থাবা বাবার আরও অনেক পোস্ট রয়েছে যেগুলো খুবই অশ্লীল বলে ছাপা গেল না।
রাজীবের পাশাপাশি আরও যেসব ব্লগার শাহবাগের আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে, তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় ইসলামবিদ্বেষী লেখালেখি চালিয়ে আসছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ডা. ইমরান এইচ সরকার, অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক, নিজেকে নাস্তিক দাবিকারী আসিফ মহিউদ্দিন, কট্টর আওয়ামীপন্থী ব্লগার ইব্রাহিম খলিল (সবাক) প্রমুখ। এছাড়া ইংল্যান্ড প্রবাসী আওয়ামীপন্থী এক ব্লগার আরিফুর রহমানকে দেখা যায় নানা আপত্তিকর মন্তব্য করতে। তাদের মধ্যে আসিফ মহিউদ্দিন সামনের সারিতে থেকে শাহবাগের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আসিফ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে নিজেকে নাস্তিক দাবি করলেও তার যত মাথাব্যথা ইসলাম ধর্ম নিয়ে। তবে কখনও কখনও সমন্বয়ের অংশ হিসেবে অন্য একটি ধর্মেরও সমালোচনা করে থাকে সে। একটি বিশেষ ধর্মের সে অনুসারী হলেও মুসলিম নাম ধারণ করে ইসলামকে বিতর্কিত করতে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে গুজব রয়েছে।
নিচে শাহবাগ আন্দোলনে সক্রিয় কয়েকজন আওয়ামীপন্থী ও নাস্তিক ব্লগারের কটাক্ষপূর্ণ এরকম কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলো :
কোরআনের আয়াত ও ইসলাম নিয়ে আসিফ মহিউদ্দিনের কটাক্ষ : আসিফ মহিউদ্দিন একজন স্বঘোষিত নাস্তিক। সে কমিউনিজমে বিশ্বাসী। শাহবাগে প্রথম সমাবেশে সে একটি মিছিলে নেতৃত্ব দেয়। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী বুদ্ধিজীবী ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ওইদিন তাকে পিঠ চাপড়ে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন এ ধরনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য।
আসিফ মহিউদ্দিন (গত ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০০) ব্লগে একটি পোস্ট লেখে। সেখানে ইসলাম ও কোরআনকে কটাক্ষ করে তার লেখা হলো :
‘বিসমিল্লহির রহমানির রাহিম। আউজুবিল্লা হিমিনাশ শাইতানির নাস্তিকানির নাজিম।’
গত বছরের ৫ মে পবিত্র কোরআন শরিফকে মহাপবিত্র ‘আহাম্মকোপিডিয়া’ লেখার মতোও ধৃষ্টতা দেখায় এ ব্লগার। তবে পরে তীব্র প্রতিবাদের মুখে এ পোস্টটি সে তার ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলে (এর স্ক্রিন শট এখনও আছে)।
আসিফ মহিউদ্দিন তার ফেসবুক ওয়ালে মুসলমানদের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মোহাম্মদ (স.) নিয়ে লেখে, ‘মুহাম্মদ নিজেকে আইডল বা নিজেকেই ঈশ্বর না বলে একটি কল্পিত ঈশ্বরকে উপস্থাপন করেছেন। মানুষ যেন ব্যক্তিপূজায় আসক্ত না হয়, তাকেই যেন মানুষ ঈশ্বর বানিয়ে পূজা করতে শুরু না করে, সে ব্যাপারে তিনি কঠোর ছিলেন। তাই তার সমস্ত রচনাই তিনি আল্লার নামে চালিয়ে দিয়েছেন, এর রচয়িতা হিসেবে আল্লাকে সৃষ্টি করেছেন!’ আরেক লেখায় সে লিখেছে, ‘ধর্মান্ধ মুসলিমদের উত্তেজনার শেষ নেই। তাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে কে মুহাম্মদের ছবি আঁকলো, কে ধর্মের সমালোচনা করলো। অথচ এতে মুহাম্মদ/আল্লার কখনই কিছু যাবে আসবে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে, মুহাম্মদের ছবি আঁকা হলে স্বর্গে মুহাম্মদ সাহেব কষ্টে কাঁদতে কাঁদতে আত্মহত্যা করছেন! আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে, তার উম্মতরা ঠিকই তাকে একজন পীরে পরিণত করেছে।’ ফেসবুকে বিশ্বনবীর একটি কাল্পনিক ছবিকে দেখিয়ে সে লেখে, এই ছবিটা মুহাম্মদের উন্মাদ উম্মতদের উদ্দেশ্যে একটা জবাব হতে পারে।’
ইসলামের বিধান পর্দা বা বোরকা নিয়ে সে লিখেছে, ‘বোরখা পরাটা সমর্থন করি না, বোরখা হিজাব মূলত আরবির বর্বর সমাজের প্রতীক। একটা সমাজে অত্যধিক বোরখার প্রাদুর্ভাব থাকা মানে হচ্ছে সেই সমাজের পুরুষগুলো সব এক একটা ধর্ষক, সেই ধর্ষকদের হাত থেকে বাঁচার জন্য সকল নারীকে একটা জেলখানা নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। এইসব অজুহাতে নারীকে যুগ যুগ ধরে বন্দী করে রাখা হয়েছে, কখনও ঘরের ভেতরে, আবার কখনও বোরখা নামক চলমান জেলখানার ভেতরে।’
ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য দান নিয়েও কটাক্ষ করে সে লিখেছে, ‘ধার্মিকদের মাথায় স্বার্থচিন্তা থাকে যে, এই উপকারে সে পরকালে হুর পাবে। এমনকি তারা কোন দরিদ্র, দুস্থ, পঙ্গু মানুষকে দেখলেও বেশিরভাগ সময়ই স্বার্থপরের মতো নিজের কথাই ভাবে। আর যদি ওই পঙ্গু লোকটির কথা ভাবেও, তাতেও তাদের মাথায় থাকে স্বর্গে হুরী সঙ্গমের অশ্লীল চিন্তা।’ তার মতে, ‘জনগণের সুখ ও অর্থনৈতিক সাম্যের জন্য সর্বপ্রথম যা করতে হবে, তা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের উচ্ছেদ।’
তবে ইসলাম ধর্ম নিয়ে এমন অবমাননামূলক ও উসকানিমূলক পোস্ট দিলেও আসিফ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
আরিফুর রহমান (হুঙ্কারসহ নানা নামে লেখে) লেখে, ‘আমি মনে করি আল্লা বিষয়টা মুহাম্মদের একটা বুজরুকি। ছিটগ্রস্ত মুহাম্মদ তার হ্যালুসিনেশনের সময় মনে করতো জিব্রাইল আইছে, তাই আল্লার কাল্পনিক কাহিনী বানিয়ে ধর্ম তৈরি করেছে। নাম দিয়েছে ইজলাম। এই হলো আল্লা বিষয়ে আসল কাহিনী।’ হিজাব নিয়ে আরিফ লিখেছে, ‘হিজাব হলো ছৌদি নোংরামির চূড়ান্ত… কুত্তাদের কালো কাপড়ের কালচার। একে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়াটাই একটা বড় রকমের গুনাহ…!! হিজাবের বিরুদ্ধে পোস্টতো আসবই। ইসলামী পুরুষতন্ত্রের ছাগুরা।’
ইব্রাহিম খলিল (সবাক) : ইব্রাহিম খলিল নামের এক প্রতারক সবাক নামে লিখেছে, ‘মির্জা সাথীর প্রোফাইট পিকচার সুন্দর। নিজের অজান্তেই লুল ফালাইতে ইচ্ছা কর্তাছে…’
আলআওয়াম আল আনায়াম (আওয়ামী লীগ চতুষ্পদ জানোয়ারের ন্যায়)। সুরা গো.আ, আয়াত-৪২০।
ধর্ম নিয়ে সবাক লিখেছে, ‘শুয়রের বাচ্চারা বানাইছে একখান বালের ধর্ম। বৌ… (এতটা অশ্লীল শব্দ যে উল্লেখ করা সম্ভব হলো না) কিছু কথা কইছে, আর… ফালানোর পর কিছু কথা বলে। দুইটাই শালাগো ধর্তব্য হইছে। বিশ্বাস হালকা কইরা স্বার্থবন্দী কথাগুলান যাচাই কইরা আবার ধার্মিকরাই বাহির কইরলো বিরাট ক্যারফা। তারপর ধর্মের গোয়া বাইর হইছে লস্করই-তাইয়্যিবাল, বাল কায়েদা, বালকাতুল জিহাদ, সোগাবুত হাহরীর। ধর্মরেও… ধর্মের সোগা দিয়া পয়দা হওয়া বর্বরগুলানরেও… ।’
শুধু তাই নয়, শাহবাগের আন্দোলনকারীদের অনেকের ফেসবুকে ইসলামকে নিয়ে নানা কটূক্তিকর স্ট্যাটাস বেশ দেখা যাচ্ছে। ঠিক এমনি আশরাফুল ইসলাম রাতুল নামে এক আন্দোলনকারী কিছুদিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে, ‘সাহস থাকলে একবার শাহাবাগ আয় রাজাকারের চুদারা, তোদের মুহাম্মদ (স.) আর নিজামী বাপকে একে অন্যের পোদের ভেতর ঢুকাবো।’ (নাউজুবিল্লাহ্)(১)
এই লেখাগুলো পড়ে হয়তো কোনো ধর্মপ্রাণ মানুষ স্থীর থাকতে পারবে না। এনমকি যারা ধর্মহীন কিন্তু বিচারবোধ আছে তারাও এগুলোর ঘোর সমালোচনা করবেন।
ভাইরাস সংক্রামিত একটি মস্তিষ্ক।
নাস্তিকতার ভাইরাস এই থাবা বাবা'র মস্তিষ্কের সেরিবেলামকে সব'চে বেশি সংক্রামিত করেছিলো।
যার ফলে 'থাবা বাবা' ভাষা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার ভাষা কুভাষায় পরিনত হয়ে যায়।
"মানুষের মস্তিষ্কের প্রধান তিনটি অংশ। যথা- (ক) গুরুমস্তিষ্ক (খ) মধ্যমস্তিষ্ক (গ) লঘুমস্তিষ্ক
(ক) গুরুমস্তিষ্ক: মস্তিষ্কের প্রধান অংশ হলো গুরুমস্তিষ্ক। এটি ডান ও বাম খণ্ডে বিভক্ত। এদের ডান ও বাম সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলে। মানব মস্তিষ্কের সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার অধিকতর উন্নত ও সুগঠিত।
(খ) মধ্যমস্তিষ্ক: গুরুমস্তিষ্ক ও পনস এর মাঝখানে মধ্যমস্তিস্ক অবস্থিত। মধ্যমস্তিষ্ক দৃষ্টিশক্তি,শ্রবণশক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত।
(গ) লঘুমস্তিষ্ক : লঘুমস্তিষ্ক গুরুমস্তিষ্কের নিচে ও পশ্চাতে অবস্থিত। এটা গুরু মস্তিষ্কের চেয়ে আকারে ছোট। লঘুমস্তিষ্ক কথা বলা ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে। এর তিনটি অংশ যথা-
১/সেরিবেলাম।
২/পনস।
৩/মেডুলা।
সেরিবেলাম , পশ্চাৎ মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা আজ্ঞাবাহী কাজ করে থাকে।এছাড়াও এটি মনোযোগ,ভাষা এর মত সূক্ষ্ম কাজের সাথেও জড়িত।রাগ,আবেগ প্রকাশে নিয়ন্ত্রকের কাজ করলেও এর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন(movement) সংশ্লিষ্ট কাজই সবচেয়ে গুরুত্ববহন করে। মেরুরজ্জু (Spinal Cord) এবং মস্তিষ্ক (Brain) এর অন্যান্য অংশ থেকে সংবেদী সংকেত গ্রহণ করে সেগুলোকে একত্র করে সূক্ষ্ম মুভমেন্টে পরিণত করে। সেরেবেলামে আঘাত সরাসরি প্যারালাইসিস করে না,বরং সূক্ষ্ম মুভমেন্টে সমস্যা করে যেমন ভারসাম্য রক্ষা।"(২)
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি নাস্তিকই একেকজন থাবা বাবা। কারণ এই ভাইরাস সংক্রামণ করে কখনো মস্তিষ্ককে। কখনো দেহকে। কখনো মনকে। যেখানেই এই ভাইরাস সংক্রামণ করুক না কেন সে থাবা বাবা হয়ে যাবে। যদিও সবাই থাবা বাবার মতো কার্যক্রম করেন না কিংবা করার সুযোগ পায়না । কিন্তু ভাইরাসে সংক্রমিত হলে থাবা বাবার ধৃষ্টতাপূর্ণ লেখাকে সমর্থন দিয়ে যান। আর এটা তো পরিস্কার অন্যায়কারী ও অন্যায়কে সমর্থনকারী সমান।
ছোট্ট একটা উদাহরণ পড়া যাক।
একজন উগ্রবাদীকে মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই প্রত্যাখ্যান করেন। উগ্রতাকে মূলোৎপাটন করেন। উগ্রতাকে ঘৃণা করেন। অপছন্দ করেন। কিন্তু যদি আপনি দেখেন কোনো সমাজ উগ্রবাদীকে প্রত্যাখ্যানের পরিবর্তে গ্রহণ করছে। উগ্রতাকে মূলোৎপাটনের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠা করছে। বিরোধিতার পরিবর্তে সমর্থন করছে। অপছন্দের পরিবর্তে পছন্দ করছে। তখন আপনি ওই সমাজকে উগ্রবাদী বলাটা মোটেও অযৌক্তিক হবে না।
থাবা বাবার এই ধৃষ্টতাপূর্ণ লেখালেখিকে বাংলাদেশের কোনো নাস্তিকই প্রত্যাখ্যান করেননি। বিরোধিতা করেননি। অপছন্দ করেননি। এ হিসেবে বাংলাদেশের নাস্তিকদেরকে 'থাবা বাবা' বলা মোটেও অযৌক্তিক নয়।
নাস্তিকতার ভাইরাসে সংক্রামিত ব্যক্তি নিজের অজান্তেই মানুষিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
[১]
আমার দেশ পত্রিকা
[২]
উইকিপিডিয়া
সত্যমনা লেখক
আহমাদ আব্দুর রাজ্জাক
সত্যমনা ডট কম
COMMENTS