এগুলো হচ্ছে নাস্তিক ও সেকুলারদের আপত্তি কোরআন সম্পর্কে।
প্রথম কথা হলো অবশেষে নাস্তিকরা আপত্তির সুরে হলেও মেনে নিয়েছে যে,
কোরআনে বিজ্ঞান সম্পর্কে অনেক তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। যদিও তাদের দাবি– এগুলো আসলে কোরআনের কৃতিত্ব নয়। বরং কপি করা। আসলে নাস্তিক-সেকুলাররা কোরআনের সাথে কখনো একমত হয়ে কোনকিছু মেনে নেয় না। যদিও কোরআনের ভাষ্য দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হোক না কেন! কোরআন যদি বলে- এখন দিন।
তারা বলবে– না, এখন রাত।
কোরআন যদি বলে- এটা ভালো
তারা বলবে– না, এটা খারাপ।
–মোটকথা কোরআনের সাথে একমত হওয়া যাবে না। তবে তখন তারা কোরআনের সাথে একমত হয়, যখন ভাবে– এটা মেনে নিলে একটা আপত্তি করা যাবে। সে সুবাদেই নাস্তিকরা মেনে নিয়েছে কোরআনে আসলেই বিজ্ঞান সম্পর্কে এমন অনেক তথ্য রয়েছে। যা ১৪০০ বছর পূর্বে কারো জানার কথা নয়। যদিও তাদের দাবি– এগুলো আসলে কোরআনের কৃতিত্ব নয়। বরং কপি করা।
এখন আসি তাদের আপত্তির জবাবে– তারা বলে বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব আবিষ্কারের পর কোরআন সেটা কপি করে কিংবা নিজের বলে দাবি করে।
১. কপি করার সুযোগ কি কোরআনের আছে? কোরআনে যতগুলো তত্ত্বের কথা বলা হয়েছে। প্রায় সবগুলোই বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে দু'তিন শো বছরের মধ্যে। অতএব কোরআনের যদি এগুলোকে কপি করতে হয় তাহলে নিশ্চয়ই কোরআনকে পরিবর্তন করতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো এই সময়ের মধ্যে কোরআন কতবার পরিবর্তন পরিমার্জন কিম্বা সংস্করণ করা হয়েছে এই বৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলো ঢুকাবার জন্য? এটা কি একটা চরম মূর্খতা সূলভ আপত্তি হয়ে গেল না!
'কোরআন যে পরিবর্তিত হয়নি' কিম্বা হওয়ার সুযোগও নেই। এটা একজন পাগলও জানে!
২. এখন অনেকে বলবে- কোরআন আসলে কপি করে না বরং নিজের বলে দাবি করে। মুসলিম স্কলাররা বিজ্ঞানের তত্ত্ব আবিষ্কার হওয়ার পর
সুকৌশলে কোরঅানের অনুরূপ একটি আয়াত খুঁজে বের করে বিজ্ঞানের সাথে মিলিয়ে দেয়।
এক্ষেত্রে আমরা বলবো- আপনারা একদম ঠিক বলেছেন। ইসলামিক স্কলাররা ঠিক এটাই করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো তাতে সমস্যা কোথায়? কোরআনে যে বিজ্ঞান সম্পর্কে বলা হয়েছে সেটাই তো তারা প্রমাণ করছে। তারা তো বিজ্ঞান আবিষ্কার হওয়ার আগে জানত না যে কোরআনের ২১/৩০ নং আয়াতে বিগব্যাং এর কথা বলা হয়েছে। কী করেই বা জানবে, তারা তো আর বিজ্ঞানী নয়। তারা তো উক্ত আয়াতটিকে ভেবেছিল নেহাৎ সাধারণ কোন বিষয়। কিন্তু বিগব্যাং আবিষ্কার হওয়ার পরেই না বুঝতে পারলো। আরে, যে বিষয়টা আবিষ্কার করতে বিজ্ঞানের এত কাঠখড় পোহাতে হলো সেটা তো আল্লাহ এত ২১/৩০ নং আয়াতেই বলে রেখেছেন।
সুতরাং বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের পরই তো আমাদের খুঁজে দেখতে হবে কোরআনে উক্ত বিষয়ে কোন তথ্য আছে কিনা! থাকলে আমরা দাবি করি আর না থাকলে দাবি করি না। কারণ কোরআন বিজ্ঞানের বই নয় যে, পুরোটা বিজ্ঞান দিয়ে ভরা থাকবে বরং এটা জীবন বিধান। আর আমরা কোরআনে বিজ্ঞান খুঁজি বা কোরআন দিয়ে বিজ্ঞানকে জাজ করি এজন্য যে, এটা স্রষ্টার কিতাব। স্রষ্টা যেহেতু তার সৃষ্টি সম্পর্কে আগে থেকেই সব জানেন। সুতরাং তিনি যে তথ্য দিবেন। সেটা ১০০% সত্য হওয়াই যৌক্তিক।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে- তাহলে আপনারা বিজ্ঞান আবিষ্কার হওয়ার আগেই কেন দাবি করেন না? বা উক্ত বিষয়টি আমাদের অবগত করেন না?
কে বলেছে আমরা দাবি করি না! আমরা তো সবসময় দাবি করে যাচ্ছি-
কোরআনের সবগুলো আয়াত-ই সত্য।বাস্তব। বিজ্ঞানসম্মত। এখন যে আয়াতের সাথেই বিজ্ঞান সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। বিজ্ঞানের সেই তত্ত্বকেও তো আমরা ইনডায়রেক্ট ১৪০০ বছর আগে থেকেই সত্য বলে দাবি করে ফেলেছি।
তবে বিজ্ঞান আবিষ্কার হওয়ার পূর্বে সে-সম্পর্কে আমরা বিজ্ঞানের মতো বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা মূলক ধারণা দিতে পারি না। কারণ উক্ত বিষয়ে আমাদের এই জ্ঞান তো স্রষ্টা প্রদত্ত। পর্যবেক্ষণ মূলক নয়। তাই স্রষ্টা যতটুকু জানিয়েছেন ততটুকুই জেনেছি।
আর এটাই তো স্বাভাবিক তাই না!
সত্যমনা লেখক,
রবিউল ইসলাম।
সত্যমনা ডট কম।
COMMENTS