কৌতূহলী একটি শিরোনাম "মানুষ কেন নাস্তিকতার আঁধারে হারিয়ে যায়"। মানুষের সাথে নাস্তিকতার আদৌ কি কোনো সম্পর্ক আছে! বাস্তবতার সাথে বিষয়টা একটু মিলালে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, মানুষের সাথে নাস্তিকতার কোনো সম্পর্ক নাই। নাস্তিকতা বিষয়টাই মানুষের সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থী।
একটা নবজাতককে যদি জঙ্গলে জনমানবহীন একটা জায়গায় রেখে আসা হয়৷ আর সে ওখানে কোনোভাবে বেঁচে যায়। কারো থেকে কোনো ধরনের বিশ্বাসের দাওয়াত না পেয়েই বড় হয় তবুও সে বিশ্বাস করতে শিখবে। তার অস্তিত্বই তাকে একটি মহান বিশ্বাসের দিকে নিয়ে যাবে। এখানে হযরত ইব্রাহিম আ. এর শৈশব খুবই প্রাসঙ্গিক।
কিন্তু এরপরেও মানুষ কেন নাস্তিক হয়? এর কিছু কমন 'কারণ' আছে। আছে কিছু 'অকারণ'ও।
মোটকথা, একটা মানুষ নাস্তিক হওয়ার পিছনে কারণ ও অকারণ উভয়টাই থাকতে পারে। হয়ত কারো ক্ষেত্রে কারণ। কারো ক্ষেত্রে অকারণ। আবার কারো ক্ষেত্রে কারণ ও অকারণ।
তবে মনে রাখতে হবে এখানে অকারণ বলতে এমন বিষয়কে বুঝানো হচ্ছে যেটা আসলে যৌক্তিক নয়। আরো সহজ করে বললে, 'অযৌক্তিক কারণ'কে এখানে অকারণ বুঝানো হচ্ছে।
এবার তাহলে সেই 'অকারণ'কে বিশ্লেষণ করা যাক। সত্যমনা প্লাটফর্মে কাজ করার সুবাদে এমন অনেক নাস্তিক্য-অ্যাফেক্টেডদের সাথে কথা হয়েছে। এনাদের নাস্তিক হওয়ার অকারণগুলো শুনে রীতিমতো হেসে উঠতাম। যদিও হাসতাম। কিন্তু মোটেও সেটাকে হাসি হিসেবেই রেখেদিতাম না। ভাবতাম, হয়তবা আমার কাছে এটা আনলজিক্যাল। কিন্তু হতে পারে এটাকেই কেউ বড় মনে করছে। এবং এই আনলজিক্যাল বিষয়গুলো তাকে নাস্তিকতাদ দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
কয়েকজন অ্যাফেক্টেডের কথা বলি। কলকাতা থেকে এক অ্যাফেক্টেড মেসেজ পাঠিয়েছিলো। প্রাথমিক কিছু কথা হলো। এরপর জানালো তার নাস্তিক হওয়ার 'অকারণ'টা।
"কোরআনের কিছু বিধান খুবই কঠিন। বিশেষকরে চোরের হাত কাটার বিধানটা। আমার কাছে এটা বর্বরতা মনে হয়। এ জন্য আমি নাস্তিক হয়েছি।"
নিরপেক্ষ পাঠকমহল একটু ভাবুন তো! চোরের শাস্তির সাথে সৃষ্টিকর্তা না থাকার সম্পর্ক কী!?
চোরের শাস্তিটা সেই অ্যাফেক্টেডের কাছে কঠিন মনে হয়েছে। অথচ যার কষ্টে অর্জিত সম্পদ, প্রিয় জিনিস, সখের বস্তুটা চোর চুরি করে নিয়ে যায়। তার কাছে কিন্তু শুধু হাত নয়, সাথে পাও কেটে দিতে ইচ্ছে হয়। ধরুন, আপনি দশ বছর প্রবাসে ছিলেন। প্রিয় মা বাবা। সন্তান। স্ত্রীকে রেখে দশটা বছর জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছেন। বিনিময়ে এক সুটকেস ভর্তি সম্পদ নিয়ে দেশে ফিরেছেন। এয়ার্পোট থেকে চোর আপনার সেই সম্পদ চুরি করে নিয়ে গেলো। এখন সেই চোরের হাতকাটার শাস্তিটা আপনার কাছে কি অযৌক্তিক মনে হবে? অথচ চোর সম্প্রদায় এরচেও বড় বড় চুরির সাথে সম্পৃক্ত।
এটা নিশ্চিত সেই অ্যাফেক্টেডের সম্পদ চুরি হলে সে হাতের সাথে মুণ্ডও নিতেন। বিশ্বাস করে নিচ্ছি, তিনি চোরকে পেলে উল্টো পেটভরে খাইয়ে ছেড়ে দিতেন। কিন্তু প্রশ্ন তো থেকেই যায়, চোরের শাস্তির সাথে সৃষ্টিকর্তা না থাকার সম্পর্ক কী।
আরেকজন অ্যাফেক্টেডের কথা বলি।
"তিনি মূলত নাস্তিক হয়েছেন মুসলিমদের উগ্রতা থেকে।"
তার কাছে মনে হয়েছে মুসলিমরা উগ্রবাদী। এ জন্য তিনি ইসলাম তরক করেছেন। মহিমান্বিত নাস্তিকতার ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ফেইসবুকে দূষিত ভাইরাস ছিড়িয়ে দিচ্ছেন।
এমন অগণিত 'অকারণ' নাস্তিক হওয়ার রিজন।
যারা নাস্তিকতা পাস্তিকতা থেকে দূরের মানুষ তাদের কাছে এই ব্যাপারগুলো আশ্চর্যের হবে। কিন্তু যারা বঙ্গীয় পাতি নাস্তিক তাদের নাস্তিক্য আক্রান্ত হওয়ার কারণ খুঁজে দেখুন অবশ্যই অবশ্যই এই অকারণগুলোর কোনোটা না কোনোটা পাবেনই।
.....অসমাপ্ত।
COMMENTS