পারলে জবাব দে (১)
২. 'মরদেহের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কারণে গ্রেফতার হয়েছে লাশ ঘরের এক পাহাড়াদার। (সময় নিউজ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২)
৩. সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে মৃত নারীদের ধর্ষণ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার মুন্না ভগতের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।(সময় নিউজ: ২০ আগস্ট ২০২১)
উক্ত তদন্তের সময় সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান মৃত নারীদের ধর্ষণ করা পৃথিবীর জঘন্যতম একটি কাজ। সুস্থ ও স্বাভাবিক কেউ এমন জঘন্যতম কাজ করতে পারে না।
ইসলামের দৃষ্টিতেও অবশ্যই এটা পৃথিবীর জঘন্যতম একটা অপরাধ। পাপ কাজ। যার কারণে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ৷
ইসলাম ধর্মে বেগানা নারীর দিকে তাকানোও গুনাহের কাজ, চাই উক্ত নারীর সম্মতি থাকুন বা না থাকুক।
আল্লাহ তা'আলার বাণী:
قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ
মু’মিনদের বল তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, এটাই তাদের জন্য বেশি পবিত্র, তারা যা কিছু করে সে সম্পর্কে আল্লাহ খুব ভালভাবেই অবগত।
(সূরাহ আন্-নূর ২৪/৩০)
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
(সূরাহ আন্-নূর ২৪/৩১)
রাসূল সা. বলেন:
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ ، عَنِ الزُّهْرِيِّ ، قَالَ : أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : أَرْدَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْفَضْلَ بْنَ عَبَّاسٍ يَوْمَ النَّحْرِ خَلْفَهُ عَلَى عَجُزِ رَاحِلَتِهِ، وَكَانَ الْفَضْلُ رَجُلًا وَضِيئًا، فَوَقَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلنَّاسِ يُفْتِيهِمْ، وَأَقْبَلَتِ امْرَأَةٌ مِنْ خَثْعَمَ وَضِيئَةٌ ، تَسْتَفْتِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَطَفِقَ الْفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا، وَأَعْجَبَهُ حُسْنُهَا، فَالْتَفَتَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَالْفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا، فَأَخْلَفَ بِيَدِهِ ، فَأَخَذَ بِذَقَنِ الْفَضْلِ، فَعَدَلَ وَجْهَهُ عَنِ النَّظَرِ إِلَيْهَا، فَقَالَتْ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ فَرِيضَةَ اللَّهِ فِي الْحَجِّ عَلَى عِبَادِهِ أَدْرَكَتْ أَبِي شَيْخًا كَبِيرًا، لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يَسْتَوِيَ عَلَى الرَّاحِلَةِ، فَهَلْ يَقْضِي عَنْهُ أَنْ أَحُجَّ عَنْهُ ؟ قَالَ : " نَعَمْ ".
আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন কুরবানীর দিনে ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে আপন সাওয়ারীর পিঠে নিজের পেছনে বসালেন। ফাযল (রাঃ) একজন সুন্দর ব্যাক্তি ছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের মাসায়েল বাতলিয়ে দেওয়ার জন্য আসলেন। এ সময় খাশ’আম গোত্রের একজন সুন্দরী মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটা মাসায়েল জিজ্ঞাসা করার জন্য আসল। তখন ফাযল (রাঃ) তার দিকে তাকাতে লাগলেন। মহিলাটির সৌন্দর্য তাকে আকৃষ্ট করে দিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাযল (রাঃ) এর দিকে ফিরে দেখলেন যে, ফাযল তার দিকে তাকাচ্ছেন। তিনি নিজের হাত পেছনের দিকে নিয়ে ফাযল (রাঃ) এর চিবুক ধরে ঐ মহিলার দিকে না তাকানোর জন্য তার চেহারা অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর মহিলাটি জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে তার বান্দাদের উপর যে হাজ্জ (হজ্জ) ফরয হওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে, আমার পিতার উপর তা এমন অবস্থায় এসেছে যে, বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে সাওয়ারীর উপর বসতে তিনি সক্ষম নন। যদি আমি তার তরফ থেকে হাজ্জ (হজ্জ) আদায় করে নেই, তবে কি তার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।
এগুলো ছাড়াও এ বিষয়ে আরো অগণিত আয়াত ও হাদিস রয়েছে৷
অনুরূপ তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ, চাই সম্মতি থাকুন বা না থাকুক। অতএব বুঝাই যাচ্ছে ইসলামের দৃষ্টিতে 'মরদেহের সাথে যৌনাচার' স্বাভাবিক ভাবেই আরও ভয়ংকর অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। কেননা মৃতব্যক্তির ক্ষেত্রে ইসলাম এতটাই সতর্কতা অবলম্বন করেছে যে, নিজের বিবাহিতা স্ত্রীর লাশের গোসল করানোও স্বামীর জন্য বৈধ নয়।
তবে সেক্যুলার, নাস্তিক, মুক্তমনাদের দৃষ্টিতে 'মরদেহের সাথে যৌনাচার' কোন অপরাধ হওয়ার কথা নয়। কারণ তাদের দৃষ্টিতে 'বেগানার সাথে যৌনাচার' স্বতন্ত্র কোন অপরাধ নয়। আর কোন কিছুর বৈধতার ক্ষেত্রে সম্মতি কিংবা অন্যের ক্ষতি না হওয়াই যথেষ্ট।
তাদের মতে জীবিতদের ক্ষেত্রে সম্মতি থাকলেই সব ধরনের যৌনাচার বৈধ। আর মৃতদের ক্ষেত্রে যেহেতু সম্মতি নেয়ারও প্রয়োজন নেই, ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই সেহেতু 'মৃতদের সাথে যৌনাচার করা খারাপ' এটা তারা কীভাবে বলতে পারে ? কোন নৈতিকতার মানদণ্ডে দাঁড়িয়ে বলবে? বলার সুযোগ নেই।
অথচ এটা যে, পৃথিবীর নিকৃষ্টতম একটা কাজ এ ব্যাপারে কোন সুস্থ বিবেকবান মানুষ দ্বিমত করতে পারে না।
কথিত মুক্তমনাদের নিকট আমাদের প্রশ্ন, আপনারা তো ধর্মীয় মানদণ্ড মানতে নারাজ। তো আপনারা কিসের ভিত্তিতে উক্ত কাজকে অনৈতিক বলবেন? অথচ আপনাদের বিকৃত মানসিকতার মতাদর্শ, এর বৈধতার দিকে ইঙ্গিত করছে।
রবিউল ইসলাম।
লেখক ও গবেষক ,সত্যমনা ব্লগ।
কই গেলো নাস্তিক মুক্তমনারা! পারলে জবাব দিয়া যা....
উত্তরমুছুন