প্রশ্নোত্তরে সত্যমনা (৭)
আল্লাহর ইচ্ছায়, আল্লাহর হুকুমে -ই যদি সবকিছু হয়, তাহলে এতে বান্দার ভুমিকা কোথায়?
এই ধরণের কিছু আয়াত দিয়ে তারা বুঝাতে চায় যে, পৃথিবীতে যা কিছু হচ্ছে তা আল্লাহর ইচ্ছায় হচ্ছে। যেহেতু সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছায়, আল্লাহর হুকুমেই হচ্ছে। অর্থাৎ আমি যে অন্যায় করছি, যিনা ব্যবিচার খুন করছি, তা তো আল্লাহর আদেশেই করছি। তাহলে কেন তিনি এ কারণে আমাদেরকে শাস্তি দিবেন?
প্রথমেই আমরা কোরআন থেকে জেনে নিব যে, আমরা কি সমস্ত অপরাধ আল্লাহর ইচ্ছায়, আল্লাহর আদেশেই করছি? স্বয়ং আল্লাহ এ সম্পর্কে আমাদের বলছেন–
তারা যখন কোন মন্দ কাজ করে, তখন বলে আমরা বাপ-দাদাকে এমনি করতে দেখেছি এবং ‘আল্লাহও আমাদেরকে এ নির্দেশই দিয়েছেন’।(হে মুহাম্মদ) আপনি বলে দিন, ‘আল্লাহ মন্দকাজের আদেশ দেন না।’ এমন কথা আল্লাহর প্রতি কেন আরোপ কর? যা তোমরা জান না। (আল-আরাফ-২৮)
দ্বিতীয়ত আল্লাহর ইচ্ছায় সবকিছু হয়। আল্লাহ ইচ্ছা না করলে কোনকিছুই হত না। আল্লাহর ইচ্ছা আছে বলেই আমরা নিজেদের স্বাধীনতায় চলতে ফিরতে পারছি। এর মানে এই নয় যে, আল্লাহই সবকিছুর জন্য দায়ি। কারণ ইচ্ছা বলতেই আমরা শুধু কামনা, বাসনা বুঝাই না। ইচ্ছার আরেকটা অর্থ হলো- অবকাশ। যেমন একটি উদাহরণ–
অর্থাৎ সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছাতে হয়।কারণ বিশ্বজগতের সমস্ত ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর। আল্লাহ না চাইলে কারো কিছু করার ক্ষমতা নেই। কিন্তু আল্লাহ মানুষকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। দিয়েছেন অবকাশ কিছু সময়ের জন্য। পরিক্ষার উদ্দেশ্যে। এ কারণেই মানুষ যা ইচ্ছা তাই করতে পারে।
অতএব মানুষ যে অন্যায় অবিচার করছে এগুলো আল্লাহর থেকে প্রাপ্ত নিজেদের স্বাধীনতা আছে বলেই করছে। ‘আল্লাহ যদি না চাইতেন’ তাহলে এগুলোও তারা করতে পারতো না। আল্লাহ চেয়েছেন বলেই মানুষ স্বাধীনভাবে সবকিছু করার ক্ষমতা পেয়েছে। তবুও আল্লাহ মানুষকে দেখিয়েছেন ভালো-মন্দ দুটি পথ। তাকে পরিক্ষা করার জন্য। এখন বান্দা যদি সেই স্বাধীনতার অপব্যবহার করে বিপদগ্রস্ত হয়ে বলে- ‘আমার কোন দোষ নেই। আল্লাহ আমাকে স্বাধীনতা, অবকাশ দিয়েছেন বলেই আমি অপরাধ করতে পেরেছি।’ তাহলে এরকম দুমুখো সূলভ আপত্তির কোন মানে হয় না। একবার আপত্তি- ‘স্বাধীনতা নাই কেন?’ এটা প্রমাণিত হয়ে গেলে- ‘স্বাধীনতা দিয়েছে কেন?’
COMMENTS